ঢাকা: বাংলাদেশে ১৮২২ ও ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।
গত ১ অক্টোবর দেশে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রেসুবেলপাড়া থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে।
গত শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে অনুভূত ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ। এ নিয়ে গত সাড়ে তিন মাসে সাতবার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ।
ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পের মধ্যে বেশি মাত্রা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ জুলাইয়ে সৃষ্টি হওয়া একটি ভূমিকম্পের। সেটি চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়িতে অনুভূত হয়। মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। গত এক বছরে বাংলাদেশে ৫০টি ভূমিকম্প হয়েছে। বেশিরভাগের মাত্রা ছিল ৪ থেকে ৫ এর মধ্যে।
বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা করে আসছেন। তারা বলছেন, রামগঞ্জের যেখানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে, সেখানে একটা ‘ক্রাস্টাল ফল্ট’ আছে, যা ধারণার মধ্যে ছিল না। শনিবারের মাঝারি ভূমিকম্পটি সাবডাকশন জোনে হয়েছে। এ অঞ্চলে যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে, তাতে এ বেল্টের যে কোনও জায়গায় যেকোনও সময় ভূমিকম্প হতে পারে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের আসাম মিলিয়ে ডাউকি চ্যুতি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বিস্তৃত। ১৮৯৭ সালে ডাউকি ফল্টে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। ডাউকি চ্যুতি ছাড়াও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার ভূগর্ভে থাকা একটি চ্যুতিও সক্রিয়। বাংলাদেশের মাটির নিচে চ্যুতি আছে মোট ১৩টি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, অনুভূত হওয়া ভূকম্পনের কেন্দ্র ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বেশ গভীরে। রিখটার স্কেলে এগুলোর মাত্রাও মৃদু থেকে মাঝারি সীমার মধ্যে হওয়ায় এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। তবে দেশের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানগত কারণে অদূর ভবিষ্যতে মাঝারি থেকে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার- ত্রিদেশিয় অঞ্চলের ভূ-তাত্ত্বিক গঠন, বৈশিষ্ট্য অনুসারে এর অবস্থানকে পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প বলয়ের মধ্যেই বিবেচনা করা হয়। ঝুঁকি মাথায় রেখে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিতে হবে’।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :