কুমিল্লা: কুমিল্লা শহরের ফুসফুস ধর্মসাগর। প্রায় ৬ শত বছরের পুরনো এই দিঘিটি কুমিল্লাবাসীর অন্যতম বিনোদনের স্থান। নির্দিষ্ট কোন দিন নয় সপ্তাহে সাত দিনই ধর্মসাগর পাড়ে উৎসব লেগেই থাকে। এখানে ঘুরতে আসা মানুষ জানায়, বিনোদন মানেই ধর্মসাগর। তবে দিঘির চারপাশে আরও সংস্কার করার দাবি তাদের। শুশীল সমাজ মনে করে সংস্কারের পাশাপাশি যদি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালানো হয় তাহলে বিশ্বজুড়ে সমাদ্রীত হবে কুমিল্লা।
কুমিল্লাবাসীর অবকাশ মানেই ধর্মসাগর। সপ্তাহের সাতদিনই মানুষের ভিড় দেখা যায় এই দিঘির পাড়ে। জলাধারটি ১৪৫৮ সালে তিপ্রা রাজ্যের রাজা ধর্ম মাণিক্য প্রথম খনন করেন। পরে তার নামের সাথে মিল রেখে দিঘিটির নাম করন করা হয় ধর্মসাগর।
ধর্মসাগরের আয়তন ১৩ দশমিক ১৮ একর। তৎকালীন মানুষের সুপেয় পানির অভাব দুর করতে এই দিঘিটি খনন করা হয়। বাংলাদেশের নগর জল ঐতিহ্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ধর্ম সাগর বিবেচিত হয়। এই দিঘির পাড়ে বসে কবিতা ও গান লিখেছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা কবি-সাহিত্যিকরা। এরমধ্যে অন্যতম কাজী নজরুল ইসলাম ও শচীন দেব বর্মন। শুরু থেকেই কুমিল্লার বিনোদন কেন্দ্রগুলো এই দিঘির পাড় ঘেষে স্থাপন করা হয়। ধর্মসগরের একপাশে কুমিল্লার একমাত্র স্টেডিয়াম ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়াম।
এছাড়াও এর পাড়ে রয়েছে নগর উদ্যান, ঈদগা, রানী কুঠির, কুমিল্লা মহিলা মহা বিদ্যালয় ও জিলা স্কুল। দুপারে জনসাধারনের হাটার জন্য ও বসার ব্যাবস্থা রয়েছে। সকালে ও সন্ধ্যার পর নগরীর প্রবীনদের হাটতে ও বেয়াম করতে দেখা যায়।
এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা দিঘিটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়। তবে নগরায়নের কারনে দিঘির পাড়ে গড়ে উঠছে বড়, বড় দালান যা প্রভাব ফেলছে দিঘির সৌন্দর্যে। এছাড়াও কিছু অসচেতন মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলে নষ্ট করছে দিঘির প্রাকৃতিক পরিবেশ। এবিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কোন পদক্ষেপ না নিলে নষ্ট হবে কুমিল্লার এই ঐতিহ্য।
এ বিষয় কুমিল্লার সুশীল সমাজ মনে করেন, দিঘির পাড়গুলো আরো সংস্কারের প্রয়োজন। দিঘির চার ধারে হাটার ব্যাবস্থা করা ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রচারপ্রচারণা চালানো হলে শুধু কুমিল্লার মানুষই না অন্যান্য এলাকার মানুষজন আসবে দিঘিটির পাড়ে ঘুরতে এবং কুমিল্লার পর্যটনে আরও সমৃদ্ধ হবে।
ওয়াইএ
আপনার মতামত লিখুন :