ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাড়ছে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ

  • রিপন গোয়ালা অভি, ময়মনসিংহ | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৪, ০৮:২৬ পিএম
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাড়ছে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কম, আর ফলনও হয় ভালো। বিষমুক্ত সবজির চাহিদা ও লাভ বেশি হওয়ায় এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার কৃষকরা। এবিষয়ে কৃষকদেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় বারো মাস পানি থাকা বিভিন্ন বিলকে চাষের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে কৃষি বিভাগ। বিলের কচুরিপানা পচিয়ে ভাসমান বেড তৈরী করে রোপন করা হয় বীজ।

লাউ, ঝিঙ্গা, বেগুন, ঢেড়শ, মরিচ সহ বিভিন্ন শাক সবজি পানির উপর চাষ করা হয় এই ভাসমান পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়া জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করায় বাড়তি খরচও নেই।  ফলে কম খরচে বেশি ফসল পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।

উপজেলার আন্দ্রাইল বিল, কেইল্যা বিল, দুবধল বিল, কুড়ের পাড় বিলে দেখা যায় পানির মাঝ খানে সবজির বাগান। বিশেষ পদ্ধতি তৈরী করা হয়েছে বাগানের বেডগুলো।  এখানে ফলিত সবজিগুলো বিষমুক্ত হওয়ায় খেতেও সুস্বাদু। 

উসমান গনি নামের বড়হিত ইউনিয়নের এক কৃষক বলেন, বিলগুলোতে বারো মাস পানি থাকে। মাছও তেমন থাকেনা। ফলে এমনিতে পড়ে থাকে বিল। পরে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেয় বিলের পানিতে সবজি চাষ করার জন্য। তারপর আমরা সবজি চাষ শুরু করি। চাষ করার পর থেকে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে।

লিটন মিয়া নামের আরেক কৃষক বলেন, বিলের কচুরিপানা পচিয়ে কিছু মাটি দিয়ে বেড তৈরী করি। সেখানে বীজ রোপন করি। অল্প পরিচর্যায় গাছগুলো বড় হয় এবং ফল দেওয়া শুরু করে। ভাসমান বেডে এখন লাউ, ঝিঙ্গা, ধুনধুল, মরিচ, বেগুন, ঢেড়শসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করা হয়েছে।

মাহাতাব উদ্দিন নামের আরেক কৃষক বলেন, এই ভাসমান সবজি চাষ করতে কোন কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। অল্প খরচে বেশি ফসল পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা হয়েছে। সবজিগুলো বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও বেশি।

লাভ বেশি হওয়ায় এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে অন্য কৃষকদের। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে উৎপাদন আরও বাড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপা রানী চৌহান বলেন, দিন দিন কৃষি জমির পরিমান কমছে। পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষদেরকে পরামর্শের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি ও সার বীজ। এতে উপজেলায় সবজি উৎপাদন বেড়েছে। এবছর ঈশ্বরগঞ্জে ৫ একর জায়গায় বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হচ্ছে ভাসমান পদ্ধতিতে। 

এসএস

Link copied!