নীলফামারী: নীলফামারী জেলায় এবার আগাম আলু চাষের ধুম পড়েছে। আলুর বীজ বপনে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার কৃষাণ-কৃষানীরা। স্বল্প সময়ে উৎপাদন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আগাম আলু চাষে এখানকার কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
আগাম আলু চাষের জন্য খ্যাত নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ ও জলঢাকা উপজেলা। দেশের আগাম আলুর সিংহভাগ উৎপাদন হয় এখানে। এ দুটি উপজেলার বেশীভাগ জমি উচুঁ হওয়ায় আগাম হাইব্রীট জাতের আমন ধান কর্তনের পর অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আগাম রুমানা, সেভেন ও কারেজ জাতের আলু লাগানো শুরু হয়।
৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে এই জাতের আলু সংগ্রহ এবং প্রথম বাজার ধরায় কৃষকরা ভালো দাম পেয়ে থাকেন। আগাম আলু চাষে সেচ সার কম লাগাসহ স্বল্প সময়ে ভালো ফলন আগাম আলু চাষে এখানকার কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি বছর নীলফামারী জেলায় ২১ হাজার নয়শত হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাত হাজার আটশত হেক্টর জমিতে। গেল ৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর বীজ বপন করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক লাল বাবু বলেন, গেল বছর ১৫ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে খরচ বাদে পাঁচ লাখ টাকা লাভ করেছি। এবছর আরও বেশি জমিতে আলু চাষের আশা করছি।
বড়ভিটা গ্রামের শ্যাম চন্দ্র, রনচন্ডী ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের আলু চাষী আব্দুল হাকিম জানান, আগাম আলুর রোগ বালাই কম থাকে এবং প্রথম বাজার ধরায় ভালো দাম পাওয়া যায় বলে তারা লাভবান হয়। তারা বলেন, এখানকার কৃষকরা আগাম আলু আবাদে যে বিপ্লব ঘটিয়েছে তা ধরে রাখতে দরকার সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম কমানো সহ সরকারী পৃষ্টপোষকতা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক এস এম আবু বক্কর সাইফুল ইসলাম জানান, আগাম আলু চাষের জন্য নীলফামারীর জমি ও আবহাওয়া উপযুগী হওয়ায় আগাম ধান কর্তনের পর এখানকার কৃষকরা এক খন্ড জমিও ফেলে রাখে না। এ ছাড়া বছরের পর বছর যে জমিগুলো পতিত থাকতো গত কয়েক বছর থেকে সে জমিগুলোতে আগাম জাতের আলু চাষ করে ইতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে এখানকার কৃষকরা।
তিনি আরও বলেন, আগাম আলু তোলার পর একই জমিতে আবার মৌসুমী আলু, ভুট্টা, তামাক লাগানো হয়। ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারে যে আগাম নতুন আলু পাওয়া যায় তার বেশী ভাগেই এখানকার উৎপাদিত। আগাম আলু চাষ করে কৃষকদের পাশাপাশি এসময় বসে থাকা কৃষি শ্রমিকরাও উপকৃত হচ্ছেন।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :