ঢাকা : নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবহন, চিকিৎসা খরচ, শিক্ষার ব্যয়। বর্তমান বেতন-ভাতা দিয়ে কর্মকর্তারা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করলেও পিষ্ঠ হচ্ছে নিন্ম গ্রেডের কর্মচারীরা।দিনকে দিন ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে পড়ছে তারা।
নিন্ম গ্রেডের কর্মচারীদের দাবী, মন্ত্রণালয়ের সচিব থেকে শুরু করে একজন অফিস সহায়ক পর্যন্ত সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, যারা ২০টি গ্রেডে বিভক্ত। এরমধ্যে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীরা বরাবরই বৈষম্যের শিকার।
এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে অল্প কিছু সাফল্য এসেছে— যা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। আমরা চাই, সরকার দাবিগুলো মেনে নিয়ে আমাদের প্রত্যাশাগুলো পূরণ করুক। তাদের দাবীগুলো হলো, নবম পে-কমিশন গঠন এবং বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করতে হবে, সচিবালয়ের মতো সচিবালযয়ের বাইরে কর্মরত সব পর্যায়ের কর্মচারীদের পদবি ও বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে; ১- ৬ গ্রেডের কর্মকর্তাদের মতো ১০ শতাংশ ও বার্ষিক মূল্যহ্রাস পদ্ধতিতে বিনা সুদে গাড়িঋণ সুবিধার মতো ১০ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদেরকে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা বিনা সুদে গৃহনির্মাণ সুবিধা প্রদান করতে হবে, রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত কর্মচারীদের চাকরি গণনা, অযাচিত ২০ শতাংশ পেনশন কর্তনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং কল্যাণ তহবিলের অর্থ লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।
নিত্যপণ্যের বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত দুমাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি ছোলা সর্বোচ্চ ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর ১৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রতি কেজি চিনি ১০ টাকা, মুগডাল ১০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি গরুর মাংস দুমাসের ব্যবধানে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫ টাকা বেড়েছে।
গুঁড়া দুধ কোম্পানিভেদে কেজিতে ২০-৪০ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ার এ চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাসিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকায় লক্ষ করা গেছে।এদিকে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও পণ্যটি বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দুমাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ৯ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় প্রতি কেজি ছোলা ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভোজ্যতেলের মধ্যে খোলা সয়াবিন গত বছরের তুলনায় লিটারে দাম ২৮ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি কেজি খেজুর বছর ব্যবধানে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
মুগডাল কেজিতে বছরে ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪ দশমিক ৫৫ ও ব্রয়লার মুরগির দাম ২৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। গুঁড়া দুধ বছরের ব্যবধানে সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে প্রতি কেজি মুগডাল বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, যা দুমাস আগে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়। আর গত বছর এই সময় বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১২১ টাকা, যা দুমাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০৯ টাকা। আর গত বছর এ সময়ে বিক্রি হয়েছে ৯৩ টাকা। এ ছাড়া গুঁড়া দুধের মধ্যে ফ্রেশ বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, যা দুমাস আগে বিক্রি হয়েছে ৫৬০ টাকা। আর গত বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছে ৫১০ টাকা।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :