মুনিয়ার মৃতদেহ বিছানায় হাঁটুভাঙা অবস্থায় ঝুলছিল, গলায়-মুখে কালসিটে দাগ

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২১, ০১:১৩ পিএম
মুনিয়ার মৃতদেহ বিছানায় হাঁটুভাঙা অবস্থায় ঝুলছিল, গলায়-মুখে কালসিটে দাগ

ফাইল ছবি

ঢাকা : কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ডায়েরিগুলো পড়ে মনে হয়েছে সে আত্মহত্যা করেনি। বাসার দরজা ভেঙে দেখা যায় তার মৃতদেহ বিছানার উপর হাঁটুভাঙা অবস্থায় ঝুলছিল। দু’পায়ের ঠিক মাঝে ছিল একটি টুল। এ ছাড়া গলায় এবং মুখে খুব গভীর কালসিটে দাগ দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) মুনিয়ার একজন আত্মীয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিবেদকের সঙ্গে এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, যে কক্ষের বিছানায় তাকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় পাওয়া গেছে সেই বিছানাও ছিল খুব পরিপাটি। এবং গোছানো। যেগুলো দেখে মনে হওয়ার কথা নয় সে আত্মহত্যা করেছেন। তার লেখা ডায়েরিগুলো এতোটাই পরিপাটিভাবে লেখা ছিল যেখানে পৃষ্ঠা এগারো পড়ে দেখবেন প্লিজ! ৯২তম পৃষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আছে এভাবে সে পর্যায়ক্রমে মার্ক করে ডায়েরি লিখেছে।

এদিকে মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনা নানা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। গুলশানের লাখ টাকা ভাড়ার বাসায় ওই কলেজছাত্রী একাই থাকতেন। ঘটনার পর তার পরিবারের দায়ের করা মামলায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে। মামলা দায়েরের পর আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। ঘটনার পর আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার অন্তরঙ্গ ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ওই তরুণীর সঙ্গে আনভীরের কি সম্পর্ক ছিল। মুনিয়া আত্মহত্যা করে থাকলে কেন করেছেন।

নাকি অন্য কোনো কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরে ফিরে এসেছে মঙ্গলবার দিনভর। এ ঘটনায় বসুন্ধরা এমডিকে আসামি করা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। বসুন্ধরা গ্রুপও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।

পুলিশ ও তদন্ত সূত্র জানায়, গুলশানে মুনিয়ার ভাড়া বাসার দেওয়ালে টানানো ছিল আনভীর ও মুনিয়ার যৌথ অনেক ছবি। ওই বাড়ির মালিক আয়োজিত ২৩শে এপ্রিলের ইফতার পার্টিতে তোলা মুনিয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন বাড়ির মালিকের মেয়ে। ওই ছবি নজরে পড়ে সায়েম সোবহান আনভীরের মায়ের। মুনিয়ার বাসা থেকে জব্দ করা ডায়রিতে পাওয়া গেছে তার সর্বশেষ লেখা। ছয়টি ডায়রিতে নিজের ভালোবাসা, বিষাদ ও যন্ত্রণার কথা লিখেছেন মুনিয়া। উল্লেখ করেছেন ‘জীবনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের’। তারপরই সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর বাড়ির ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ওই দিন রাতে গুলশান থানায় মামলা করেছেন মুনিয়ার বড় বোন ব্যাংক কর্মকর্তা নুসরাত জাহান। মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে। পুলিশ ইতিমধ্যে ২৩শে এপ্রিল থেকে ২৬শে এপ্রিল পর্যন্ত সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী, বাড়ির মালিক, মালিকের জামাতা ইব্রাহিম আহমেদ রিপন ও তার স্ত্রীকে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে মডেল হিসেবে পরিচিত ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে। 

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ওই বাসায় আনভীরের যাতায়াত ছিল কিনা তা নিশ্চিত হতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অন্য কেউ ওই বাসায় ঘটনার আগে গিয়েছিল কিনা তাও তদন্ত করা হচ্ছে। 

এ ছাড়াও নিহত মুনিয়ার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলেই তার মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আনভীর বা অন্য কারও প্ররোচনার প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। 

ডিসি সুদীপ চক্রবর্তী জানান, এ ঘটনার মামলার পরপরই সায়েম সোবহান যাতে দেশ ছাড়তে না পারেন এজন্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

এদিকে, গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর বাড়িতে গেলে কথা হয় নিরাপত্তারক্ষী আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে। তিনি জানান, গত ২২, ২৩শে এপ্রিল পরপর দু’দিন ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন সায়েম সোবহান আনভীর। ফ্ল্যাট বি-৩ থাকতেন মুনিয়া। বাসাটি গত ১লা মার্চ দুই বছরের জন্য ভাড়া নেন মুনিয়া। মুনিয়ার নামে ভাড়ার চুক্তি থাকলেও সংশ্লিষ্টরা জানান বাড়ির মালিকের মেয়ের জামাতা ইব্রাহিমের কাছে প্রতি মাসে ভাড়া ১ লাখ ও সার্ভিস চার্জ ১১ হাজারসহ ১ লাখ ১১ হাজার টাকা অন্য কেউ পাঠাতেন।

মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান জানান, তার বোন মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ঢাকায় থাকাকালেই আনভীরের সঙ্গে পরিচয়। পরিচয় থেকে প্রায়ই ফোনে কথা হতো। দেখা হতো বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে। ২০১৯ সালে স্ত্রী পরিচয়ে বনানীর একটি বাসা ভাড়া নিয়ে মুনিয়াকে নিয়ে থাকতেন আনভীর। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনভীরের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। ওই সময় ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে দিয়ে মুনিয়াকে নিজেদের বাসায় ডেকে নেন আনভীরের মা। বাসায় নিয়ে তাকে হুমকি-ধমকি দেন। আনভীরের সঙ্গে মেলামেশা করলে পরিণতি হবে কঠিন। শর্ত দেন বেঁচে থাকতে চাইলে ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই সময়ে আনভীরও তাকে কুমিল্লা চলে যেতে বলেন। ওই সময়ে করোনার প্রকোপ দেখা দেয়। অবস্থা প্রতিকূল দেখে ঢাকা ছেড়ে কুমিল্লা চলে যান মুনিয়া। এরমধ্যে আবার আনভীর তাকে ডাকেন। বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। যেহেতু তার পরিবার এটি মানছে না তাই বিয়ে করে বাইরের কোনো দেশে মুনিয়াকে সেটেল করবেন বলে জানান। এক পর্যায়ে গত ১লা মার্চ গুলশানের ওই বাসা দুই বছরের জন্য ভাড়া নেন মুনিয়া। সম্পর্ক ভালোই চলছিল তাদের। প্রায়ই ওই বাসায় আসা-যাওয়া করতেন আনভীর। দেয়ালে ঝুলানো ছিল তাদের অন্তরঙ্গ বিভিন্ন ছবি। কিন্তু মুনিয়াকে নিয়ে বাইরে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করতেন না আনভীর।

গত ২৩শে এপ্রিল ওই বাড়ির মালিকের বাসায় ছিল ইফতার পার্টি। ওই পার্টিতে গিয়েছিলেন মুনিয়া। সেসব ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন বাড়ির মালিকের মেয়ে। এটি নজরে পড়ে পিয়াসার। পিয়াসার মাধ্যমে জানতে পারেন আনভীরের মা। এ নিয়ে আনভীরের সঙ্গে কথা হয় তার মায়ের। তারপর আনভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুনিয়ার ওপর। 

এ বিষয়ে মামলার এ জাহারে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান উল্লেখ করেছেন, মুনিয়া তাকে ফোন করে বলেছে আনভীর তাকে বকা দিয়েছেন। বলেছেন, মুনিয়া ফ্ল্যাটের মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছে কেন, কেন ছবি তুলেছে। এসব ছবি ?পিয়াসা দেখেছে। পিয়াসা তার (আনভীর) মাকে সবকিছু জানিয়ে দিয়েছে। এজাহারে বলা হয়, আসামি মোসারাতকে বলে, তিনি দুবাই চলে যাচ্ছেন, সে যেন কুমিল্লায় চলে যায়। আসামির মা জানতে পারলে তাকে (মুনিয়া) মেরে ফেলবেন। এজাহারে নুসরাত আরো উল্লেখ করেছেন, দু’দিন পর ২৫শে এপ্রিল মুনিয়া তাকে ফোন করেন। ওই সময় কান্নাকাটি করে মুনিয়া বলেন, আনভীর তাকে বিয়ে করবেন না, শুধু ভোগ করেছেন।

মুনিয়া তাকে আরো বলেছেন, আনভীর বলেছেন, মুনিয়া তার শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মুনিয়াকে তিনি ছাড়বেন না। মুনিয়া চিৎকার করে বলেন, আসামি তাকে ধোঁকা দিয়েছে। যেকোনো সময় তার বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তারা (বাদী নুসরাতের পরিবার) যেন দ্রুত ঢাকায় আসেন।

আত্মীয়স্বজন নিয়ে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত বেলা দুইটার দিকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় রওনা দেন। আসার পথে বারবার মুনিয়ার ফোনে কল করেন। কিন্তু তিনি আর ফোন ধরেননি। গুলশানের বাসায় পৌঁছে দরজায় নক করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে নিচে নেমে আসেন। তারা নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষ থেকে বাসার ইন্টারকমে ফোন করেন। পরে ফ্ল্যাটের মালিকের নম্বরে ফোন দিলে মিস্ত্রি এনে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকার পরামর্শ দেন। মিস্ত্রি ডেকে তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর তিনি দেখেন, তার বোন ওড়না প্যাঁচিয়ে শোয়ার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলে আছেন।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, পুলিশ এসে ওড়না কেটে মুনিয়ার লাশ নামায়। আলামত হিসেবে আসামির সঙ্গে ছবি, আসামির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে লেখা ডায়েরি ও তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইলফোন জব্দ করে পুলিশ। 

জানা গেছে, মুনিয়ার সঙ্গে সর্বশেষ তার বোনের কথা হয়েছে সকাল সাড়ে ৯টায়। ওই ঘটনার আগে আনভীরের সঙ্গে ফোনে উত্তপ্ত কথা হয় মুনিয়ার। এরকম একটি অডিও রেকর্ড ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। এতে মুনিয়াকে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন আনভীর। এমনকি তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন তিনি। পুলিশ সূত্র বলছে, আসামির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় ২৬ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে মুনিয়া মারা যান। ওই বাসা থেকে ছয়টি ডায়েরি জব্দ করেছে পুলিশ। একটি ডায়েরিতে তার সর্বশেষ লেখা পাওয়া গেলেও এতে তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। 

এতে লেখা রয়েছে, ‘আনভীরের সঙ্গে প্রেম করা আমার ভুল ছিল। বিবাহিত ও বাচ্চার বাবার সঙ্গে প্রেম করা ঠিক হয়নি। তবুও আমি তাকে ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহর সিদ্ধান্ত ছাড়া বিয়ে হয় না। আনভীরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আনভীর আমাকে ভুল বুঝেছে। তাই আমি জীবনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাল এসে আনভীর তার ভুল বুঝতে পারবে।’

তিন ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট মুনিয়া। বাবা শফিকুর রহমান ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। তাদের বাড়ি কুমিল্লার উজির দিঘিরপাড়। মা কাজী সেতারা বেগম ছিলেন ব্যাংকার। গত তিন বছর আগে মা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে এবং বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কুমিল্লা সদরে তাদের বহুতল বাড়ি এবং নিজস্ব মার্কেট রয়েছে। বড় ভাইয়ের সঙ্গে তাদের দু’বোনের পারিবারিক কিছুটা দূরত্ব রয়েছে। বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে বড় বোন নুসরাত জাহান এবং বোন জামাই মো. মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে পড়ালেখা করতেন মুনিয়া। বোন জামাই মিজানুর রহমান চাঁদপুরে অবস্থিত একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। মুনিয়া মিরপুরের ন্যাশনাল বাংলা স্কুল থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন। গত বছর (২০২০) এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা থাকলেও দিতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসএসসিতে পড়াকালীন মিরপুরে ছাত্রী হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা করতেন মুনিয়া।

ঘটনার একদিন আগে মুনিয়ার বোন জামাই তাকে মুঠোফোনে কিছু টাকাপাঠিয়েছিলেন। এটাই ছিল বোন জামাইয়ের সঙ্গে তার সর্বশেষ যোগাযোগ। ওই আত্মীয় জানান, মুনিয়ার জন্য পারিবারিকভাবে বিয়ের জন্য পাত্র দেখছিলেন তার পরিবার। কিন্তু আনভীরের জন্য মুনিয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেয়। ওই আত্মীয়ের দাবি মুনিয়া ছিলেন খুব ধর্মপরায়ণ। তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন তার বিশ্বাস হচ্ছে না।

বসুন্ধরা এমডি’র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা: রাজধানীর গুলশানে কলেজছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলার আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভিরের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. শহিদুল ইসলামের আদালত গতকাল এ নিষেধাজ্ঞা দেন। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আসামি যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করা হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামের এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

এ ঘটনায় ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহানকে মামলায় আসামি করা হয়। মামলা নম্বর-২৭। ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০শে মে দিন ধার্য করেন। ওদিকে আদালত থেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ইতিমধ্যে বসুন্ধরার এমডি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা ছিল। তবে গতকাল রাতে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেননি। সূত্র: মানবজমিন।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Link copied!