জাতীয় পে-স্কেলে বৈষম্যের শুরু যেখানে 

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২১, ০২:১১ পিএম
জাতীয় পে-স্কেলে বৈষম্যের শুরু যেখানে 

ঢাকা : পে-স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়ন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল ধুম্রজাল ফলে আগ্রহ নিয়ে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম জাতীয় পে-স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়ন হলে কর্মচারীরা হয়তো ভালো কিছু পাবেন। আমরা সকলেই জানতাম পে-স্কেল একটু ভিন্ন ধাচের হবে গতানুগতিক ছোয়া থেকে দূরে।

জাতীয় পে-স্কেল ২০১৫ এবং কর্মচারীদের স্বপ্নে দেখা পে-স্কেল কতটা ছন্দে ছিল?। জ্বলজ্বল করে জ্বলে উঠা, লোকমুখে গড়ে উঠা স্বপ্নের পে-স্কেল কর্মচারীদের কতটা বঞ্চিত করেছে তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানে। আজকের আলোচনা জাতীয় পে-স্কেল ২০১৫ কর্মচারীদের জন্য কতটুকু সুফল বয়ে এনেছে এবং ফরাস উদ্দিনের পে-স্কেলের সুপারিশ মোতাবেক বাস্তবায়িত হলে কর্মচারীগণ কতটুকু স্বস্তিতে থাকতো?

সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ধাপ
ড. ফরাস উদ্দিনের পে-স্কেল সুপারিশ মোতাবেক সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার এবং সর্বনিম্ন ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে কাটছাট করে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮২৫০ টাকা করা হয়। এতে সচিব কমিটি সর্বোচ্চ ধাপে বৃদ্ধি করে কিন্তু সর্বনিম্ন ধাপকে আরও নিম্নে নামিয়ে দেয়। এতে ক্ষানিকটা বৈষম্য সৃষ্টি হল।

গ্রেড কমালে বৈষম্য কি কিছুটা দূর হত?
পে-স্কেল কমিটির সুপারিশে ২০টি গ্রেডের পরিবর্তে ১৭টি গ্রেড এবং পরবর্তীতে ১৬ গ্রেডে করার প্রস্তাব করা হয়। যেখানে কমিশন বিদ্যমান বেতন স্কেলের ২০টি গ্রেড থেকে কমিয়ে ১৬টি গ্রেড করার সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত উপনীত হয়। যদিও পে স্কেলের ধাপ বিদ্যমানের চেয়ে কমিয়ে অর্ধেক করা প্রস্তাবও কমিটিতে উঠে। গ্রেড কমানোর ব্যাপারে ৮ নং গ্রেড (১২০০০ টাকার স্কেল) এবং ৯ নং গ্রেড (১১০০০ টাকার) মিলে একটি গ্রেড এমন ধারা বজায় রাখার প্রস্তাব রাখা হয়। ৯ গ্রেডের মূল বেতন ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়া বিদ্যমান স্কেলের ১১ নং গ্রেড (৬৪০০ টাকার স্কেল) এবং ১২ নং গ্রেড (৫৯০০ টাকার স্কেল) যুক্ত হয়ে একটি গ্রেডে পরিণত করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব করা হয়।

আনুতোষিকের হার বৃদ্ধির প্রস্তাব
পে-স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর বা তার বেশি হলে পেনশন সুবিধা প্রতি এক টাকায় ২৩০ টাকা করে প্রদান করা হয় এবং আনুতোষিক ৮০ শতাংশ হারে রয়েছে। যা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পেনশন সুবিধা প্রতি এক টাকায় ৩০০ টাকা এবং আনুতোষিক ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। যদি সেটাও ঠিক রাখা হয়নি এক টাকায় ২৩০ টাকা ঠিকই রাখা হয় কিন্তু পেনশন ১০০ শতাংশের স্থলে ৯০ শতাংশ হারে প্রদান করা হয়।

কারা ছিল এই পে এ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশনে?
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছয় মাস মেয়াদী ১৭ সদস্যের পে এ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ কমিশনের স্থায়ী পে-কমিশনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. ফরাস উদ্দীনকে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৭ সদস্যের পে-কমিশনে চেয়ারম্যান ছাড়াও রয়েছেন একজন সদস্য সচিব, ৩ জন স্থায়ী সদস্য ও ১২ জন অস্থায়ী সদস্য (শিক্ষকও ছিল)। এছাড়া কমিশনে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন সদস্য সচিবের কাজ করেন। রাখা হয়নি কোন নিম্ন শ্রেণীভূক্ত কর্মচারীকে।

কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি
এই কমিশনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ঐ সময় দেশে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্যাডার ও বিভাগের বেতন বৈষম্যের বিষয়গুলো চিহ্নিত করে সমাধানের সুপারিশ করবে এই কমিশন। কর্মকর্তাদের বৈষম্য গুলো ঠিকই চিহ্নিত করা হয় কিন্তু পড়ে রয় কর্মচারীদের হাহাকার ভরা চিৎকার। ঈদের নতুন কাপড় পাওয়ার মত খুশিতে ধীরে ধীরে ধাপাচাপা পড়ে যায় তাদের কান্না। একটুই শান্তনা খুজে নেয় যে, যা পেয়েছি এই কম কিসের? তাদের গ্রেডে ধাপ ব্যবধান ২০% আমাদের না হয় ৪% আছে। আছে তো তবুও ৪% এটিও যদি না থাকতো? কে শুনে গরীবের চিৎকার ও দরদ ভরা কান্না?

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত পে কমিশন টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের প্রচলিত প্রথা বাদ দিয়ে ধাপ কমিয়ে ১৬ গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণের সুপারিশ করেন। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ঠিকই বাদ দেয়া হয় কিন্তু গ্রেড কমানো হয় না। এতে তার প্রস্তাব আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। ফলে একটি বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। সচিব কমিটি পে কমিশনের মতে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিলের সুপারিশ গ্রহণ করলেও গ্রেড সংখ্যা ২০টি -ই রেখে দিলেন। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড তুলে দেয়ার প্রস্তাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকসহ সরকারি কর্মচারিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। আন্দোলনের হুমকি দেয়া হলেও সচিব কমিটির প্রস্তাবই বহাল রাখা হয়।

সকল কর্মচারীকে জীবন বীমার আওতায় আনয়ন 
সব সরকারি চাকরিজীবীকে জীবন বীমার আওতায় আনার প্রস্তাব রাখা হয়। বীমার বিপরীতে প্রিমিয়ামের টাকা সরকার দেবে। প্রিমিয়ামের অঙ্ক কত হবে, তা কমিশন সুপারিশ করবে। তবে বীমা করা বাধ্যতামূলক থাকবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবন বীমা প্রস্তাবটিও বহাল রাখা হয়নি। স্কেলের ধাপ বিদ্যমানের চেয়ে কমিয়ে অর্ধেক করা হতে পারে। তবে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন স্কেল কত হবে, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন সর্বোচ্চ ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়ানো হয়। বেতনতো বেড়েছে নিচের স্তরের কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বাদ দিলে কত শতাংশ বেড়েছে?

চূড়ান্তকরণে ভূমিকা যাদের
পে কমিশন রিপোর্ট সচিব কমিটির যাচাই-বাছাই শেষে সুপারিশগুলো প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করার জন্য পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তা ফেরত আসে জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে। ড. ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত পে কমিশনের রিপোর্টে সরকারি চাকরিজীবীদের বিদ্যমান সিলেশন গ্রেড ও টাইম স্কেল তুলে দেয়ার সুপারিশ করা হয়। চাকরিজীবীদের জন্য ৫ শতাংশ হারে চত্রুবৃদ্ধি বেতন বাড়ানোর কথা বলা হয়। পে কমিশন রির্পোট পর্যালোচনা কারী সচিব কমিটিও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিদ্যমান টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড তুলে দেয়ার পক্ষেই সুপারিশ করে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পে-স্কেল বই তারা নিজেরাই তৈরি করে
সরকারি কোষাগার থেকে বেতন পান এমন কর্মকর্তা-কর্মচারির সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। এদের সবার জন্য বেতন নির্ধারণের ছক পূরণ করা হয়। প্রতিটি ছকের জন্য ৩৩টি বিষয় রয়েছে। এছাড়াও সরকারি-বেসামরিক, বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, স্ব-শাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানসমূহ, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস, বেসামরিক ক্ষেত্রে নার্সিং পেশায় নিয়োজিত ডিপ্লোমাধারীদের জন্য বেতন স্কেল সংক্রান্ত ৭টি বই তৈরি করা হয়। তবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বই তারা নিজেরাই তৈরি করে।

কমিশন মোট ৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন করে
মূলত তিন ধরনের প্রস্তাব দিতে দেয় কমিশন। এই তিন প্রস্তাবের একেকটিতে সর্বোচ্চ বেতন বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে এক লাখ, ৮০ হাজার ও ৭০ হাজার টাকা। তিনটি প্রস্তাবেই বর্তমানে ২০ স্কেলের পরিবর্তে ১৬টি স্কেল করার কথা বলা হয়। সর্বোচ্চ অর্থাৎ প্রথম ধাপে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের বেতন ধরা হয়। এদের বেতন এক লাখ টাকা করার সুপারিশ করা হয়। সিনিয়র সচিবদের জন্য ৯০ হাজার টাকা বেতনের সুপারিশ করা হয়। আর সচিবদের জন্য ৮০ হাজার টাকা সুপারিশ করা হয়। গ্রেড-২ বা দ্বিতীয় ধাপে সর্বোচ্চ বেতনের সুপারিশ করা হয় ৭০ হাজার টাকা। সব ক্ষেত্রেই সর্বনিম্ন বেতন করার প্রস্তাব থাকছে ১০ হাজার টাকা।

সকল ভাতাদি সময় উপযোগী করার প্রস্তাব রাখা হয়
পে-কমিশনের প্রতিবেদনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিদ্যমান বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত, গাড়ি, মোবাইল ফোন, আপ্যায়ন, উৎসব, শ্রান্তি, বিণোদনসহ সব ভাতা ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা সময় উপযোগী করার প্রস্তাব করা হয়।

সুচিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড ইস্যুর প্রস্তাব
এতে প্রথমবারের মতো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের জন্যও বীমা সুবিধার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া থাকছে বিকল্প প্রস্তাবও। চাকরিজীবীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের নামে পাঁচ বছর মেয়াদি স্বাস্থ্যকার্ড ইস্যু করার প্রস্তাবও রাখা হয় প্রতিবেদনে। এতে এককালীন চিকিৎসা খরচ দেওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। বেতন বা স্বাস্থ্যভাতা থেকে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট হারে টাকা কেটে রাখার কথা বলা হচ্ছে সুপারিশে। এর বিনিময়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যয় সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করে কমিশন। তবে কেউ মারা গেলে অথবা দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়লে আলাদাভাবে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। এতে অবশ্য বর্তমানে সর্বোচ্চ ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ সুবিধা কার্যকর করা হয়।

গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা
সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসিক সঙ্কট মোকাবেলায় সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। নতুন বেতন স্কেলে বাড়ি নির্মাণ বা কেনা বাবদ ঋণের পরিমাণ ৪০ মাসের মূল বেতনের সমান করার সুপারিশ করা হয়। তবে এ ঋণ সুদযুক্ত থাকার কথা বলা হয়। সুদের হার হতে পারে ৫ শতাংশ। কিন্তু ১,২০,০০০০ টাকা ঋণ সুবিধা এখন পর্যন্ত সরকার সংস্কার করতে পারেনি ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও। বর্তমানে যদিও ২০-৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদানের নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু সে তো শুভংকরের ফাকিঁ তা আমরা সকলেই অবগত আছি।

বেতন প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে 
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন নতুন বেতন কমিশন রিপোর্টে সব ক্ষেত্রে বেতন প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। স্বীকার করতে হবে, এটি দুঃসাহসিক কাজ। এ নিয়ে সর্বস্তরে যে ইতিবাচক প্রবাহ সৃষ্টি হওয়া উচিত ছিল, তা হতে দেওয়া হয়নি। বেতন কমিশনকে দায়ী করার সুযোগ নেই। কমিশনের কাজ হলো সুপারিশ করা, এটি গ্রহণ করা কিংবা বাস্তবায়ন করা সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ার।

ভারত বা অন্যান্য দেশে বেতন কমিশনের আকার খুব ছোট হয়, কিন্তু আমাদের কমিশন ছিল ১৭ সদস্যের। এতে কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধিও ছিলেন। কিন্তু পে স্কেলে রাখা হয়নি বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীদের প্রতিনিধি। ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কোন সদস্যকে অর্ন্তভূক্ত করার হয় ১৭ সদস্যের কমিটিতে।ঔপনিবেশিক আমলের শ্রেণি প্রথা বিলোপ এবং এফিসিয়েন্সি বার বা দক্ষতার বাধা বলে যে দুষ্ট প্রকৃতির জিনিস ছিল, সেটি দূর করা হয়েছে কিন্তু অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অসঙ্গতিকে অপসারণ করা হয়নি।

৬ জনের পরিবারের জন্য বেতন ভাতার স্কেল 
কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ছয়জনের পরিবার যাতে সম্মানজনকভাবে জীবন যাপন করতে পারে এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মীরা সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা ও গতিশীলতা দিয়ে রাষ্ট্রকে সেবা দিতে পারেন। এরপর রাষ্ট্র তাদের দুর্নীতিমুক্ত থাকার ব্যাপারেও অনুশাসন দিতে পারবে। এ কারণেই বেতন বৃদ্ধির হারটা বেশি ছিল। দু’জন ই চলা মুশকিল। এটি নাকি ছয় জন সদস্যের পে স্কেল।

সমৃদ্ধি সোপান ব্যাংক কোথায়?
বেতনের বাইরে একটি সমৃদ্ধি সোপান ব্যাংক, বিমা, শিক্ষা ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতার বৃদ্ধি ও অন্যান্য ভাতাদি যৌক্তিক করার যে সুপারিশ পে স্কেলে থাকলেও সেগুলি বাস্তবায়িত হয়নি আজও।

৯ম গ্রেডের বেতন ২৮% বেশি ১০ গ্রেড থেকে
নবম গ্রেডে প্রভাষকেরা আছেন। যেমন জনপ্রশাসনে প্রকৌশলী, চিকিৎসক, পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তারাও আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আন্দোলনের ফলেই আজ নবম গ্রেড একটি যথাযোগ্য উচ্চতায় গিয়ে পৌছে গেছে। নিম্ন শ্রেণী কোন কর্মচারী আন্দোলনে না আসার ফলে তাদের ভাগ্যের কোন অগ্রগতি হয়নি।

টিফিন ভাতা ও ধোলাই ভাতা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পত্র পত্রিকা, টকশো, মানব বন্ধন সকল জায়গায় এটিকে নগন্য ও জগণ্য বলে প্রচারিত হলেও কর্তৃপক্ষ এটি পুন:নির্ধারণ করছে না। অপরদিকে কমিটির সভার সম্মানি, প্রশিক্ষকের সম্মানি বা ভাতা, মোবাইল ভাতা এবং টেলিফোন নগদায়ণ সুবিধা তৈরি সহ অন্যান্য সকল কর্মকর্তা লেভেলের সুযোগ সুবিধা পুন: নির্ধারিত হলেও একটি পরিপত্রের মাধ্যমে সরকার টিফিন ভাতা বা ধোলাই ভাতা পুন: নির্ধারণ কেন করছে না তা আমার বোধগম্য নয়।

সোনালীনিউজ/আইএ

Link copied!