মন্ত্রিসভার আকার বৃদ্ধি ও রদবদলের আভাস 

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৪, ১২:৪১ পিএম
মন্ত্রিসভার আকার বৃদ্ধি ও রদবদলের আভাস 

ঢাকা : আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে জোর গুঞ্জন রয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মন্ত্রিসভার আকার বৃদ্ধির। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে আলোচনা চলছে।

মন্ত্রিসভার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতা এবং ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তারা সমকালকে বলেছেন, মন্ত্রিসভার আরেক দফা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। ঈদুল আজহার পর এ প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কয়েকজন নতুন মুখ সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারেন। তালিকায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর কয়েক নেতার নামও রয়েছে। এর বাইরে অর্থ, পরিকল্পনাসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে রদবদল হতে পারে। তাতে বর্তমান মন্ত্রিসভার কারও কারও পদোন্নতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয় পায় আওয়ামী লীগ। 

১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এরপর ১ মার্চ সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সাতজন। এতে প্রধানমন্ত্রীসহ বর্তমান মন্ত্রিসভা দাঁড়ায় ৪৪ জনে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৫ মন্ত্রী ও ১৮ প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী আছেন দু’জন।

অবশ্য সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় কারা ঠাঁই পাচ্ছেন, তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। জানতে চাইলে দায়িত্বশীল নেতাদের প্রায় সবাই একবাক্যে বলেছেন, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ কিংবা রদবদলের এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ঈদুল আজহার পর মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীই এটি গঠন করবেন। অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের পরে মন্ত্রিসভায় অদল-বদল হতে পারে।

সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালামকে অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বর্ষীয়ান এই দুই নেতা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় সামলাতে দক্ষতার পরিচয় দিলেও, বয়সজনিত কারণে তাদের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে। ওই দুই মন্ত্রণালয় থেকেই দায়িত্বশীলরা অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আসবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কেউ কেউ সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারেন। বিশেষ করে দলের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষপদে থাকা ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু’জনের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে কেউ বাদ পড়ছেন না। তারপরও মন্ত্রিসভার কারও কারও মধ্যে এক ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করছে। আবার প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ পেতে পারেন পদোন্নতি। অন্তত একজন প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে।

ওই সূত্র আরও জানায়, ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধি সম্ভাব্য সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নাম শোনা গেলেও, উড়িয়ে দিচ্ছে না নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা। জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাকে নিয়েও ব্যাপক আলোচনা চলছে। এ ছাড়া নতুন কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন।

আওয়ামী লীগ ও সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নীতিনির্ধারক নেতারা জানিয়েছেন, বর্ধিত মন্ত্রিসভায় ক্লিন ইমেজ ও অভিজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দলের ত্যাগী ও জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রাধান্য পেতে পারেন। তবে প্রবীণ ও তারুণ্যের সমন্বয় রাখা হলেও এগিয়ে থাকবেন একাধিকবার নির্বাচিত এমপিরা।

২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম সংসদের মতো ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বার সরকারের মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। দ্বাদশ সংসদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের রেকর্ড গড়েছেন। সূত্র : সমকাল। 

এমএএইচ

Link copied!