শতাধিক পণ্যে শুল্ক-কর বাড়ল

বছরের শুরুতে খরচের ধাক্কা

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম
বছরের শুরুতে খরচের ধাক্কা

ঢাকা : মোবাইল ফোন ব্যবহার, ইন্টারনেট, টিস্যুসহ প্রায় ১০০টি পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে এবং ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরকারের সমালোচনা করে তারা বলছেন, অর্থবছরের মাঝামাঝিতে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো নজিরবিহীন।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ভ্যাট হার বাড়ানোর ফলে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়বে। এ উদ্যোগ মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। এতে বিশেষ করে নিম্ন ও স্বল্প আয়ের লোকদের জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। ভোগান্তি বাড়বে। এমনিতেই সাধারণ মানুষ কষ্টে রয়েছে। আসলে অনভিজ্ঞ সরকার থাকলে যেটা হয়, সেটাই হচ্ছে। তাই যত দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সরকার জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে তত মঙ্গল।’

ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলবে।

উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং আইএমএফের চাপে অন্তর্র্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রান্তিক, স্থায়ী উপার্জনকারী এবং নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা দেশের অর্থনীতিতেও সংকট তৈরি করবে। এসব সিদ্ধান্ত প্রকারান্তরে স্বৈরাচারী সরকারের মতো জনগণের পকেট কাটার নীতি, যা নিয়েছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। অবিলম্বে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর আরোপের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এটা মড়ার উপর খাড়ার ঘা-এর মতো। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ যখন দিশেহারা তখন এ পদক্ষেপ জনদুর্ভোগ আরও চরমে নিয়ে যাবে। সরকারের ব্যর্থতার দায়ে মানুষ শাস্তি পেতে পারে না।’

তিনি আইএমএফের পরামর্শে নেওয়া এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সরকারের খুবই দুর্বল অবস্থার প্রতিফলন। মানুষকে বোঝার সক্ষমতা তাদের নেই। পাশাপাশি এটি তাদের দায়িত্বহীনতার প্রতিফলন। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে তা বোঝা যায়। শেখ হাসিনার অর্থমন্ত্রীর মতো কথা বলছে যে মানুষের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

আসলে সরকার আইএমএফের কথায় চলছে। সরকারের নিজস্ব কোনো চিন্তাভাবনা নেই। মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। সরকারের এ ভুল সিদ্ধান্তের ফলে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়বে।’

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে টিকে থাকব, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। আইএসপি সেবার মান আরও খারাপ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারকে এ ধরনের পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই। কারণ, এতে শুধু ব্যবসার ক্ষতি হবে না, সেবার মান কমবে এবং গ্রাহকদের খরচও বাড়বে।’

পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে পণ্য উৎপাদনে খরচ বাড়বে। এর জন্য মার্কেটে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।’

সরকার তিতাসের গ্যাস চুরি বন্ধ করলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দরকার হবে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘তিতাসের নানা সংযোগে যেসব চুরি হচ্ছে, তা বন্ধ করতে পারলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দরকার হবে না।

তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির এতটাও দাম বাড়েনি যে ৩০ টাকা থেকে এক লাফে ৭৫ টাকা করা লাগবে। আমরা মনে করি সরকারের এ সিদ্ধান্ত একেবারেই ভিত্তিহীন। গ্যাসের এমন মূল্য বৃদ্ধির বিষয় আমরা আমাদের যুক্তি উপস্থাপন করব। আর যদি আমাদের সিদ্ধান্ত না মানা হয়, তাহলে ভর্তুকি দিয়ে নতুন করে আর কোনো সংযোগ নেব না।’

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভ্যাট একটি প্রত্যক্ষ কর। এটি ভোক্তা দিয়ে থাকেন বলে একে ভোক্তাকরও বলা হয়। যেহেতু ভ্যাট ভোক্তা দেন কাজেই ভ্যাট বাড়ানোর অর্থই হচ্ছে তাদের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া। বর্ধিত ভ্যাট হার কার্যকর হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবেন। ফলে ভোক্তা বা জনগণকে আগের চেয়ে বেশি দামে পণ্য কিনতে হবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, ‘অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো নজিরবিহীন। এর আগে এমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। যদিও অন্তর্র্বর্তী সরকার বলছে, এই বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এর প্রভাব আখেরে ভোক্তাদের ওপরই পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট। এ সিদ্ধান্ত তাদের বোঝা আরও বাড়াবে। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্য থাকলে কর ফাঁকি ঠেকানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। কর ফাঁকি রোধ করা গেলে এ ধরনের পদক্ষেপের প্রয়োজন হতো না এবং জনগণের কষ্টও লাঘব হতো।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যিক পর্যায়ে ওষুধের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর কারণে ওষুধের দামও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ১০ শতাংশ থেকে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার কারণে মুদ্রণ, সিনেমার টিকিট, মেরামত ও সার্ভিসিং এবং পরিচ্ছন্নতা সেবার খরচও বাড়বে। উড়োজাহাজের টিকিটের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোয় আকাশপথে যাত্রার খরচও বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবার খরচ।

মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের খরচে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ ৩৯ শতাংশের পরিবর্তে ৪২ দশমিক ৪৫ শতাংশের বেশি দিতে হবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় ইন্টারনেট বিলও বাড়তে পারে।

গত ১ জানুয়ারি অন্তর্র্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির এনবিআরের প্রস্তাব পাস করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ না থাকায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে শুল্ক-কর বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে।

জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সামগ্রিক রাজস্ব আদায় ২ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে যাওয়ায় দেশীয় ও বিদেশি উৎস থেকে যখন সরকারের ঋণ নেওয়ার চাপ বাড়ছে, ঠিক সেই প্রেক্ষাপটেই পরোক্ষ কর বাড়ানোর পথে গেল এনবিআর।

অবশ্য ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অনুমোদন করা ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্তের অংশ হিসেবেও এই ভ্যাট বাড়ানোর সুপারিশ ছিল।

যেসব পণ্য ও সেবার খরচ বাড়বে : আগে মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের ওপর ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ হতো। এটি বাড়িয়ে এখন ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচও বাড়বে।

ব্র্যান্ডের দোকান ও বিপণিবিতানের তৈরি পোশাকের আউটলেটের বিলের ওপর ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া সব ধরনের রেস্তোরাঁর ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। শুল্ক-কর বৃদ্ধির তালিকায় আরও আছে টিস্যু, সিগারেট, বাদাম, আম, কমলালেবু, আঙুর, আপেল ও নাশপাতি, ফলের রস, যেকোনো ধরনের তাজা ফল, রঙ, ডিটারজেন্ট, মদের বিল, পটেটো ফ্লেক্স, চশমার প্লাস্টিক ও মেটাল ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, সানগ্লাস, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও তাতে ব্যবহৃত তেল, বিদ্যুতের খুঁটি, সিআর কয়েল, জিআই তার ইত্যাদি। এ ছাড়া ভ্রমণকরও বাড়ানো হয়েছে।

অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজের আবগারি শুল্ক ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। সার্কভুক্ত দেশের জন্য এই শুল্ক বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। এশিয়া মহাদেশের দেশে (সার্কভুক্ত দেশ বাদে) ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা করা হয়েছে। আর এসবের বাইরে অন্যান্য দেশে ৩০০০ টাকার আবগারি শুল্ক ৪০০০ টাকা করা হয়েছে।

নিম্ন, মধ্য, উচ্চ ও অতিউচ্চ সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৬০, ৬৫ দশমিক ৫, ৬৫ দশমিক ৫ ও ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ। স্থানীয় ব্যবসায় ভ্যাটের হার ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে ওষুধ ব্যবসার ক্ষেত্রে এ হার ২ দশমিক ৪ থেকে ৩ শতাংশ করা হয়েছে।

চলচ্চিত্র প্রদর্শক (প্রেক্ষাগৃহ), চলচ্চিত্র পরিবেশক, মেরামত ও সার্ভিসিং, স্বয়ংক্রিয় ও যন্ত্রচালিত করাতকল, খেলাধুলার আয়োজক, পরিবহন ঠিকাদার, টেইলার্স, ভবন রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা, খেলাধুলার ক্লাব, বোর্ড সভায় যোগদানকারী, মোটর গ্যারেজ, ডকইয়ার্ড, ছাপাখানা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, ইলেকট্রিক পোলের ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

নন-এসি হোটেলে, কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, মিষ্টান্ন ভা-ার, জোগানদার, সানগ্লাস (প্লাস্টিক, মেটাল ফ্রেম) ফ্যাশন হাউজের ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। রেস্তোরাঁ, ইভেন্টিং সংস্থার ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের ট্রান্সফরমার, নারিকেল ছোবড়ার ম্যাট্রেস, চশমার ফ্রেম ও রিডিং গ্লাস (প্লাস্টিক ও মেটাল), আম, আনারস, কলা, পেয়ারা ও তেঁতুলের পেস্ট বিআরটিএ থেকে সরবরাহ করা লেমেনেটেড ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। চাটনি কেচাপ, হাতে তৈরি বিস্কুট, কেক, আচারের ভ্যাট হার একইভাবে বাড়ানো হয়েছে। বার ও বারযুক্ত হোটেল-মোটেলে সেবায় ভ্যাট হার ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া এলপি গ্যাসে ভ্যাট ৫ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ইন্টারনেট সেবায় (আইএসপি) ১০ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে। ফলের রসে ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। কার্বোনেটেড ও নন-কার্বোনেটেড পানীয়তে যথাক্রমে ৩০ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে। বিভিন্ন ফল ও বাদামে ভ্যাট ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। ডিটারজেন্ট ১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ, সাবানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ, পেইন্টস ও ভার্নিসে ১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।

এনবিআরের প্রজ্ঞাপন : গত বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে মোবাইল ফোন ব্যবহার, ইন্টারনেট, টিস্যুসহ প্রায় ১০০টি পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আজ শনিবার থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার, ইন্টারনেট, টিস্যু, আঙুর, আপেল, তরমুজ, তৈরি পোশাক, রেস্তোরাঁ, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, হোটেল ভাড়া ও চশমার মতো পণ্যের ওপর নতুন ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কহার কার্যকর হবে। রেস্তোরাঁ, বিস্কুট ও কেক, আচার ও টমেটো সস, কাপড়, দর্জির দোকান, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন ও টাওয়েল, মিষ্টি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, নন-এসি হোটেল, চশমা, সানগ্লাস, মোটর ওয়ার্কশপ ও লুব্রিকেন্ট তেলের ওপর ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট দিতে হবে।

এনবিআর জানায়, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, বৈদ্যুতিক খুঁটি, স্টিলের কোল্ড রোল্ড কয়েল, চুনাপাথর ও ডলোমাইটের মতো কয়েকটি শিল্পপণ্যের ভ্যাটও ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সূত্র : দেশ রূপান্তর

এমটিআই

Link copied!