ঢাকা: গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল সেনাবাহিনীর হামলায় ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) মেডিকেল কর্মীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া মধ্য গাজায় বোমা হামলা এবং উত্তর ও দক্ষিণের গভীরে ট্যাঙ্ক নিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। এই নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে বুধবার ভোর থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ জন নিহত এবং আরও ৫৩ জন আহত হয়েছেন। খবর রয়টার্স
ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির একদিন পরই গাজায় এমন ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে তেল আবিব। এদিকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় অনেক ফিলিস্তিনি আশা করছেন হয়তো হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হবে এবং এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় চলা হামলা বন্ধ হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হতাহতের ঘটনার পর গাজায় ইসলায়েলি বাহিনীর অভিযানে জেরে নিহত এবং আহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৪৪ হাজার ৩৩০ জনে এবং এক লাখ ৪ হাজার ৯৩৩ জনে। অর্থাৎ, গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা চার হাজার ৩ শ’র মাইলফলক পেরিয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে ইতিহাসের ভয়াবহ অভিযান চালায়। এরপরই প্রতিশোধ স্বরূপ গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যা গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। এতে গাজার ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া নারী আমাল আবু হামেইদ বলেন, ‘আশা করি লেবাননের মতো গাজাতেও যুদ্ধবিরতি হবে। কারণ আমি সন্তানদের আমার ভূমি দেখাতে চাই, বাড়ি দেখাতে চাই। ইসরায়েল আমাদের সঙ্গে কী করেছে আমি সেই দৃশ্য দেখাতে চাই। আমরা নিরাপদে বাঁচতে চাই।’
২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :