ঢাকা : বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত পার হলেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাকিস্তানের ৪ প্রদেশ ও ৩ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে একযোগে শুরু হবে ১২ তম সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এরই মধ্যে নেয়া হয়েছে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি।
ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচারণা। কিন্তু কমছে না উত্তেজনা। বেশ কিছু সহিংসতার ঘটনায় ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নির্বাচনে কারা : দেশটির ১২তম সাধারণ নির্বাচনে এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএলএন) নওয়াজ শরিফ এবং পাকিস্তান-তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ইমরান খানের। যদিও বেশ কয়েক মাস ধরে কারাগারে বন্দি ইমরান খান তবে প্রচারণা ও ভোটের মাঠে পিছিয়ে নেই তার দল।
নির্বাচন নিয়ে পাকিস্তানে যতখানি উত্তেজনার পারদ চড়েছে— তার মূল অবদান এই দুটি দলেরই। অসম হলেও প্রকৃত লড়াই হচ্ছে পিএমএলএন এবং পিটিআইয়ের প্রার্থীদের মধ্যে। একদিকে পিএমএলএন পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এবং অন্যদিকে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান পাকিস্তানের শীর্ষ জনপ্রিয় নেতা।
এক সময় দুর্নীতির দায়ে রাজনীতিতে আজীবন নিষেধাজ্ঞার দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নওয়াজ শরিফ লন্ডন ও দুবাইয়ে চার বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে গত ২০২৩ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরেছেন। নির্বাচনী নিষেধজ্ঞা কাটিয়ে এবারের নির্বাচনে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি আসান থেকে নির্বাচনে প্রার্থিতাও করছেন তিনি।
অন্যদিকে বেশ কিছু মামলায় কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে যথাক্রমে ১০ ও ১৪ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী প্রতীক ও পায়নি তার দল। ফলে নিজেদের বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থীদের তুলনায় বেশ বেকায়দায় আছেন পিটিআই প্রার্থীরা।
শেষ প্রচারণা : ইতিমধ্যেই নির্বাচনের আগে প্রচারণা শেষ করেছে দলগুলো। মঙ্গলবার প্রচারের শেষ দিন সমাবেশে অংশ নিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জানান তার দল জিতলে পাকিস্তান এশিয়ান টাইগারে পরিণত হবে। দাবি জানান, তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা না হলে পাকিস্তান অগ্রগতির পথেই থাকত।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারকদের ক্ষমতায় ফিরে আসতে দেওয়া উচিত নয়, কারণ তারা পাকিস্তানের জন্য কলঙ্ক বয়ে আনে।‘
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে কারাগার থেকে ভোটারদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান। নিজেদের অধিকার রক্ষা ও পোলিং স্টেশন পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবাররের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান পিপলস পার্টির বিলোওয়াল ভুট্টো। এর আগের বার তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। মঙ্গলবার নিজ শহর লারকানায় নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিপক্ষদের ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা দেন তিনি।
এ সময় বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘নেওয়াজ শরীফ যদি চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসেন, ছয় মাসের মধ্যে তিনি ক্ষমতা থেকে অপসারণের মুখোমুখি হবেন।‘
ভোট গ্রহণ : বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হবে ভোটদান প্রক্রিয়া এবং বিরতি ছাড়াই বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে।
পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যা ২৪ কোটি ১০ লাখ। ইসিপির নথি অনুযায়ী, মোট এই জনসংখ্যার মধ্যে ভোটারের সংখ্যা অর্ধেকের কিছু বেশি— ১২ কোটি ৮০ লাখ। তাদের একটি বিশাল অংশ আগামীকাল ভোট দেবেন। এখন দেখার বিষয় পরবর্তী পাকিস্তানের ক্ষমতার মসনদে কে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :