ঢাকা : আফগানিস্তানে আবারও শরিয়াহ আইন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। দেশটিতে দ্রুত শরিয়াহ আইন কার্যকর করা শুরু করবেন বলে গত শনিবার ঘোষণা দেন তিনি।
শরিয়াহ আইনের আওতায় ‘ব্যভিচারে’অভিযুক্ত নারীদের প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত এবং পাথর ছুড়ে মারা হবে। খবর দ্যা গার্ডিয়ান।
এর মাধ্যমে আফগানিস্তানে আবারও নারীদের প্রকাশ্যে পাথর ছুড়ে হত্যার নিয়ম এবং বেত্রাঘাত চালু হতে যাচ্ছে তালেবানের মাধ্যমে। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতার কারণেই তালেবান আবারও এই আইন ফিরিয়ে আনতে পারছে অভিযোগ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর।
গত শনিবার তালেবান নিয়ন্ত্রিত বেতার-টেলিভিশন আফগানিস্তান এক অডিও সম্প্রচার করে। সেখানে হিবাতুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নারীদের বেত্রাঘাত করব...আমরা তাদের (ব্যভিচারের জন্য) প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা নারী অধিকার সংগঠন হয়তো এটিকে নারী অধিকারের লঙ্ঘন বলতে পারেন। কিন্তু তারা আমাদের গণতান্ত্রিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ড করেছে।’ হিবাতুল্লাহ এই পদক্ষেপকে পশ্চিমা প্রভাবের বিরুদ্ধে তালেবানের সংগ্রামের ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে তালেবানের কাজ শেষ হয়নি, এটি মাত্র শুরু।
তালেবানের এই ঘোষণা আফগান নারীদের জন্য আতঙ্কের হলেও এতে অবাক হওয়ার কিছু দেখছে না দেশটির নারী অধিকার সংগঠনগুলো। তারা জানান, আফগানিস্তানের ১ কোটি ৪০ লাখ নারী ও মেয়ের সুরক্ষা ও অধিকার হিসেবে অবশিষ্ট যতটুকু ছিল, তাও এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একজন আফগান গবেষক সাহার ফেত্রাত বলেন, “দুই বছর আগেও নারীদেরকে জনসমক্ষে পাথর মেরে হত্যা করার সাহস তাদের (তালেবান) ছিল না, কিন্তু এখন তারা করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আফগান কর্মী এবং প্রচারক সামিরা হামিদি বলেন, “আফগান নারীরা এখন নিপীড়ন ও অবিচার থেকে নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতাহীন।‘
আফগানিস্তানে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী গবেষণা সংগঠন আফগান উইটনেসের মতে, শুধুমাত্র গত বছরে তালেবান-নিযুক্ত বিচারকরা ৪১৭ জনকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত এবং মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এদের মধ্যে ৫৭ জন নারী ছিলেন।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :