ঢাকা: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরোধীরা বলছেন, গাজায় থাকা জিম্মিদের মুক্তির চুক্তির দাবিতে এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রায় ১ লাখ মানুষ সমাবেশ করেছেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জিম্মি এলাদ কাৎজিরের মরদেহ উদ্ধার করার পর তেল আবিবসহ ইসরায়েলের অন্যান্য শহরে সমাবেশ হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা ‘এখনই নির্বাচন’ এবং ‘এলাদ, আমরা দুঃখিত’ বলে স্লোগান দেন।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে রোববার (৭ এপ্রিল)।গাজায় থাকা জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা ইসরায়েলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন।
বিক্ষোভকারীরা গাজায় হামাস ও তার সহযোগীদের হাতে থাকা প্রায় ১৩০ জিম্মিকে মুক্ত করতে ইসরায়েল সরকারের অক্ষমতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।
গতকাল শনিবার গাজা থেকে এলাদের মরদেহ উদ্ধার করে আইডিএফ। গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস হামলা চালিয়ে তাকেসহ অন্যদের জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাস।
আয়োজকেরা বলেন, বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের প্রায় ৫০টি জায়গায় সমাবেশ করেছেন।গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ব্যর্থতা নিয়ে ইসরায়েলিদের মধ্যে ক্ষোভ কাজ করছে। এই ক্ষোভ থেকে তার পদত্যাগের দাবিতে ইসরায়েলে একের পর এক বড় ধরনের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে।
তেল আবিবের বিক্ষোভের মধ্যে একটি গাড়ি ঢুকে পড়েছিল। এতে পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার কারণ অস্পষ্ট। আজ থেকে ঠিক ছয় মাস আগে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। সেই থেকে নৃশংস গাজা যুদ্ধ শুরু।
একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে মিসরের কায়রোতে মিলিত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন আলোচকেরা।
কিছু গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক বিল বার্নস ও কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি মিসর, ইসরায়েল, হামাসের আলোচকদের সঙ্গে যোগ দেবেন।
এলাদের বোন কারমিট পালটি কাৎজির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। বলেছেন, তারা একটি নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হলে এলাদ জীবিত ফিরে আসতেন।
কারমিট ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের নেতৃত্ব কাপুরুষ এবং রাজনৈতিক বিবেচনা দ্বারা চালিত। যে কারণে এই চুক্তিটি এখনো হয়নি।’৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
তখন থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি হামলায় ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু আছে।
ইসরায়েলি হিসাব অনুসারে, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলাকালে ২৫৩ ইসরায়েলি ও বিদেশিকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রায় ১২৯ জন জিম্মি এখনো গাজায় রয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ১২টি মরদেহ উদ্ধার করেছে।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :