রাফার আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ৪৫, বিশ্বনেতাদের ক্ষোভ  

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৪, ১২:৪৮ এএম
রাফার আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ৪৫, বিশ্বনেতাদের ক্ষোভ    

ঢাকা : গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা নগরীর একটি তাঁবু শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪৫ জন নিহত হয়েছে। 

রোববার (২৬ মে) রাতের এ হামলায় শিবিরের তাঁবুগুলো পুড়ে গেছে।

কর্মকর্তারা সোমবার একথা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা।

ইসরায়েলকে হামলা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া আদেশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ এক্সে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, এই অভিযান বন্ধ হতে হবে। রাফায় ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কোনও নিরাপদ জায়গা নেই।

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা বলেছেন, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের রায়কে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে।

আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সবার জন্যই প্রযোজ্য। যুদ্ধে ইসরায়েলের আচরণের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য, বলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রোববার তেল আস-সুলতান এলাকার আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলের হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ারা জানিয়েছেন, শিবিরটিতে আশ্রয় নিয়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা রাতে শুতে যাওয়ার সময় বোমা হামলা হয়।

ইসরায়েল রাফার পূর্বাঞ্চলে দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অভিযান চালাচ্ছে। রোববার রাতের হামলার বর্ণনা দিয়ে এক ফিলিস্তিনি মা বলেন, “আমরা দোয়া করছিলাম… শিশুদেরকে ঘুম পাড়ানোর জন্য বিছানায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন বিকট এক শব্দ শুনি।

আমাদের চারপাশে আগুন জ্বলে যায়। সব শিশু চিৎকার শুরু করেছিল… শব্দ ছিল ভয়ংকর। আমাদের মনে হচ্ছিল ধাতু আমাদের ওপরে এসে পড়ল বলে। শার্পনেল ঘরের ভেতরে এসে পড়েছিল।

হামলায় নিহতদের অর্ধেকই নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ বলে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তারা জানান, অনেকেই মারাত্মকভাবে পুড়ে যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ইসরায়েল বলছে, তাদের বিমান বাহিনী রাফায় হামাসের একটি কম্পাউন্ডে আঘাত হেনেছে। সেখানে আঘাত হানতে ‘সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে লক্ষ্যে নিখুঁতভাবে আঘাত হানার ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা ব্যবহার করা হয়েছে’।

এতে পশ্চিম তীরে নিয়োজিত হামাসের চিফ অফ স্টাফ ও ইসরায়েলে প্রাণঘাতী হামলার পেছনে থাকা আরেকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিহত হয়েছে।

রাফা থেকে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের রকেট ছোড়ার পর ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

জানুয়ারির পর থেকে রোববারেই প্রথম তেল আবিব লক্ষ্য করে দীর্ঘ পাল্লার রকেট ছুড়ে হামাস। এদিন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, রাফার ওই এলাকা থেকে ইসরায়েলে আটটি রকেট ছোড়া হয়েছে। তবে অধিকাংশ রকেটই বাধা দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানায় তারা।

হামাসের আল-কাসাম ব্রিগেড তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের’ জবাবে রকেটগুলো ছোড়া হয়।

তেল আবিবের অবস্থান রাফা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে। জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আইসিজে গত শুক্রবার ইসরায়েলকে রাফায় হামলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল।

কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেই গাজার দক্ষিণের এই নগরীতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

এমটিআই

Link copied!