একনজরে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৪, ১২:২৫ পিএম
একনজরে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া

ঢাকা : ইরানের তেহরানে নিজ বাসভবনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আজ বুধবার সকালে ইসমাইল হানিয়ার নিহত হওয়ার খবর প্রচার করে।

খবরে বলা হয়, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী তেহরানে এক হামলায় ইসমাইল হানিয়া এবং তার দেহরক্ষী নিহত হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

তবে তিনি কীভাবে নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

কে এই ইসমাইল হানিয়া : ২০১৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন ইসমাইল হানিয়া। তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানের পদে থাকলেও তাঁকেই এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মনে করা হয়।

মিশর অধিকৃত গাজা উপত্যকার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে ১৯৬২ সালের ২৯ জানুয়ারি ফিলিস্তিনি মুসলিম এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ইসমাইল হানিয়া। পরিবারকে আর্থিক সমর্থন করার লক্ষ্যে যৌবনে ইসরায়েলেও কাজ করেছিলেন তিনি।

জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি এবং ১৯৮৭ সালে গাজা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক পাস করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়েই ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সাথে জড়িয়ে পড়েন ইসমাইল হানিয়া। ১৯৮৫-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত, তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্র পরিষদের প্রধান ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন : ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে হামাসের উত্থানের সময় ফিলিস্তিনি সুন্নি মুসলিমদের এই রাজনৈতিক ও সামরিক আন্দোলনে সামনের কাতারের একজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন ইসমাইল হানিয়া।

১৯৮৯ সালে তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ইসরায়েল। এরপর ১৯৯২ সালে আরও কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে হানিয়াকে ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এক বছর নির্বাসনে থাকার পর তিনি গাজায় ফেরেন। ১৯৯৭ সালে হামাসের মতাদর্শিক গুরুর কার্যালয়ের প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। এতে হামাসে তাঁর পদমর্যাদা বাড়ে।

গাজা উপত্যকায় হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ২০০৪ সালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শেখ আহমেদ ইয়াসিন নিহত হন। এরপর হামাসে ইসমাইল হানিয়ার প্রভাব আরও পোক্ত হয়।

ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে ইসমাইল হানিয়ার সরাসরি উত্থান ২০০৬ সালে। মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন বিভক্ত ফাতাহ দলের বিপরীতে নির্বাচনে জয় পায় তার দল। এ জয়ের পর ইসমাইল হানিয়া ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন।

পরে ২০১৭ সালে ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন। সংগঠনটি ২০০৭ সাল থেকে ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজার শাসন ক্ষমতায় আছে।

কিন্তু ২০১৭ সালেই যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হামাসকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে বিবেচনা করে। এছাড়া ইসমাইল হানিয়াকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। কয়েক বছর ধরে ইসমাইল হানিয়া কাতারে বসবাস করে আসছিলেন।

ইসমাইল হানিয়া হামাসের মধ্যে সামরিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ না হলেও রাজনৈতিকভাবে গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন তিনি। হামাসের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি এবং গাজায় জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সাথে মূল আলোচক ছিলেন তিনি।

এমটিআই

Link copied!