ঢাকা: নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দুই দিনের মাথায় নতুন প্রধানমন্ত্রীও পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিজয়ী জোটের সতীর্থ হরিণী অমরসুরিয়াকেই দেশের ১৬তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। এই হিসেবে হরিণী এখন শ্রীলঙ্কার তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আগে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সিরিমাভো বন্দরনায়েকে। পরবর্তীকালে সিরিমাভোর কন্যা চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গাও শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
৫৪ বছর বয়সী নতুন প্রধানমন্ত্রী হরিণী অমরসুরিয়া একজন শিক্ষাবিদ-রাজনীতিবিদ। শ্রীলঙ্কার একজন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মীও তিনি। পাশাপাশি তিনি নতুন প্রেসিডেন্টের দল জেভিপির সঙ্গে জোটবদ্ধ এনপিপির শীর্ষস্থানীয় নেতা।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, হরিণী অমরসুরিয়ার সঙ্গে ভারতের একটি সংযোগ রয়েছে। ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৯১ থকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক হন হরিণী। এই কলেজে তাঁর ব্যাচমেট ছিলেন বলিউড পরিচালক নলিন রাজন সিং। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে হরিণী সম্পর্কে নলিন রাজন সিং বলেন, ‘তাঁকে অস্পষ্টভাবে মনে পড়ে। তবে কলেজ উৎসব এবং বিতর্কগুলোতে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা এখনো মনে আছে। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেখা সত্যিই আশ্চর্যজনক।’
হরিণী অমরসুরিয়া পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক নৃবিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৭০ সালে, দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার গল অঞ্চলে, চা উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি পরিবারে। সেখানেই তাঁর শৈশব কেটেছে।
পরবর্তী সময় চা-বাগানগুলোর জাতীয়করণ হলে পরিবারের সঙ্গে রাজধানী কলম্বোতে স্থানান্তরিত হন হরিণী। কলম্বোর একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করার সময় তিনি শক্তিশালী নারীবাদী আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
মানবাধিকারের কাজ করতে গিয়েই শ্রীলঙ্কার মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন হরিণী অমরসুরিয়া। ২০১১ সালে প্রভাবশালী রাজাপক্ষ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তিনি সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ যাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন।
নভেম্বরে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংসদ গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হরিণী। তাঁর নেতৃত্ব শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে নারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :