ঢাকা : গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৬১২ জনে পৌঁছেছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৯৫ জন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ৫ হাজার ৮৩৪ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে থাকায় এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে গাজা ইতোমধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৮৫ শতাংশের বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় ২০ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে শরণার্থী শিবিরে বা অনিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, এবং ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গাজাবাসীর প্রায় সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ধ্বংসযজ্ঞে গাজার প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজায় চলমান এই নৃশংসতার অবসান চেয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করেছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সেই আহ্বান উপেক্ষা করে হামলা অব্যাহত রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরাইলের এই কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইতোমধ্যেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। এতে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ অসংখ্য স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে।
গাজায় চলমান সংঘাতে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার এবং সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। তবে যুদ্ধের কারণে উদ্ধারকাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংকটের সমাধানে অবিলম্বে কার্যকর আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হতে পারে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :