ঢাকা : ভারতের জন্য বরাদ্দ বিশেষ সুবিধা ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ বা (এমএফএন) তকমা বাতিল করেছে সুইজারল্যান্ড। সুইস সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সুইজারল্যান্ডে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য কর হার আবারও ১০ শতাংশ হবে। এর আগে ২০২১ সালে এই হার ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলের এক মামলার জেরে ভারতের ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে সুইজারল্যান্ড। এই সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, একটি দেশ অন্য কোনো দেশকে এমএফএন মর্যাদা দিলে সেই দেশের প্রতি শুল্ক ও বাণিজ্য নীতিতে বিশেষ সুবিধা দিতে হয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুইজারল্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় পণ্য রফতানি ও বিনিয়োগ প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সুইজারল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে ডাবল ট্যাক্স অ্যাভয়েডেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট (ডিটিএএ) বা দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি রয়েছে। ভারতের অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ডে কাজ করে। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে যেন অর্জিত আয়ের জন্য দুই দেশেই কর দিতে না হয়, সে লক্ষ্যে এ চুক্তি করা হয়। ভারত ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ১৯৯৪ সালে এ চুক্তি হয়, যা পরে ২০১০ সালে সংশোধিত হয়েছিল।
মূলত, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ওই মামলায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলে একটি পক্ষ ছিল। ভারতীয় শীর্ষ আদালত জানান, ভারতীয় আয়কর আইনের ৯০(১) ধারা অনুযায়ী একটি প্রজ্ঞাপন ছাড়া এমন ‘দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি’ কার্যকর হবে না।
সুইজারল্যান্ডের ফাইন্যান্স বিভাগ গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জানায়, তারা ভারতকে প্রজ্ঞাপন ছাড়া আর এমএফএন সুবিধা দেবে না। তাই আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এমএফএন সুবিধা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের মার্চে আইসল্যান্ড, লিচটেনস্টেইন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড- ইউরোপের এই চার দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইএফটিএ) হয়। ওই চুক্তির আলোকে আগামী ১৫ বছরে ভারতে ১০ হাজার কোটি বা ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশগুলো। তবে সুইজারল্যান্ডের নতুন এ পদক্ষেপের ফলে সম্ভাব্য এ বিনিয়োগে ঝুঁকি তৈরি হলো।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সুইস সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমার ধারণা, ইফটা (ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সমিতি)-র কারণে আমাদের দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি পুনরায় আলোচনা করা হবে। এটি একটি দিক। অন্যটি হলো ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’। এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো আপডেট নেই। আমরা পরে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :