‘ল্য পেনকে মুক্তি দিন,’ ফরাসি নেত্রীর পাশে ট্রাম্প-ভ্যান্স ও মাস্ক

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
‘ল্য পেনকে মুক্তি দিন,’ ফরাসি নেত্রীর পাশে ট্রাম্প-ভ্যান্স ও মাস্ক

ঢাকা : তহবিল তছরুপের অভিযোগে ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থি নেত্রী মেরিন ল্য পেনের কারাদণ্ড এবং ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ হওয়ার পর তাকে সমর্থন দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং ধনকুবের ইলন মাস্ক।

ল্য পেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তহবিলের অপব্যবহার করে দলের কর্মকর্তাদের বেতন দিয়েছেন। সোমবার আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে চার বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেছে।

এর মধ্যে দুই বছর ল্যে পেনকে গৃহবন্দিত্বে কাটাতে হবে এবং দুই বছর সাজা স্থগিত থাকবে। সেই সঙ্গে তাকে এক লাখ ইউরো (১,০৮,২০০ ডলার) জরিমানাও দিতে হবে এবং আগামী পাঁচ বছরের জন্য তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

আদালতের এই রায় আগামী বছরের মধ্যে না পাল্টালে ল্য পেন ফ্রান্সে অনুষ্ঠেয় ২০২৭ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ল্য পেনের এই সাজায় এরই মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্প। নিজে যে সমস্ত মামলায় পড়েছিলেন সেগুলোকে বামপন্থি ‘উইচ হান্ট’ আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প।

ফ্রান্সের নেত্রী ল্য পেনের মামলার সঙ্গে নিজের পরিস্থিতির তুলনা টেনে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে লেখেন, “মেরিন ল্য পেনের বিরুদ্ধে উইচ হান্ট ইউরোপীয় বামদের আইনকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বাক স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের একটি উদাহরণ। এটি সেই একই কৌশল যা আমার বিরুদ্ধেও প্রয়োগ করা হয়েছিল।”

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদের প্রেসিডেন্সির পর পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়া, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারের পর ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা এবং গোপন নথি নিজ বাড়িতে রেখে দেওয়ার অভিযোগে মামলার মুখে পড়েছিলেন। তবে এ সব অভিযোগই ট্রাম্প অস্বীকার করেছেন এবং সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছেন।

২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর তার বিরুদ্ধে থাকা সব অভিযোগই খারিজ হয়ে যায়। ট্রাম্পের সঙ্গে গতবছরের এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন জেডি ভ্যান্স।

তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে কট্টর ডানপন্থি দলগুলোর ক্ষমতাসীন হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের অপব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার নিউজম্যাক্সে ভ্যান্স বলেন, ইউরোপ শতভাগ আমাদের বন্ধু, সন্দেহ নেই। কিন্তু এই বন্ধুত্ব বিঘ্নিত হবে এবং পরীক্ষার মুখে পড়বে, যদি তারা এভাবে বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠানোর চেষ্টায় থাকে।

ওদিকে, ইলন মাস্ক, যিনি ইউরোপজুড়ে ডানপন্থিদের সমর্থন করে থাকেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বার্তাটি নিজের এক্স প্ল্যাটফর্মে পুনরায় পোস্ট করে লেখেন: ল্য পেনকে মুক্তি দিন!

ফ্রান্সের বিরোধী নেত্রী ল্য পেনকে ওয়াশিংটনের এই তিন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের প্রকাশ্য সমর্থন কন্টকাকীর্ণ সাংবিধানিক কোনও প্রশ্ন বা রাজনীতিবিদদের অপকর্ম বিচারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অনেক দেশসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা বিচ্যুতিকেই সামনে এনেছে।

ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ যেখানে রাজনীতিবিদদের বিচারে বিচারবিভাগের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে ট্রাম্প এবং তার মিত্ররা একে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।

ল্য পেন ফরাসি বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংকট তৈরির অভিযোগ এনেছেন এবং রোববার প্যারিসে গণপ্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন।

এমটিআই

Link copied!