ঢাকা: হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতন জীবনযাপনের গুরুত্ব নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা ও নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনেকেই এড়িয়ে যান—আর সেটা হলো ঘুম।
চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের অভাব শুধু ক্লান্তি এনে দেয় না বরং সরাসরি হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ ফেলে।পর্যাপ্ত ঘুম না হলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হৃদপিণ্ডকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করতে হয়, ফলে হার্টে বাড়তি চাপ পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে যদি মানসিক চাপ বেশি থাকে, তাহলে রাতে ঘুমও কম হয়। এর প্রভাব শুধু হার্টে নয়, মস্তিষ্ক ও হজমতন্ত্রেও পড়ে। মানসিক চাপ থেকে শরীরে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন বাড়ে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, হজমে সমস্যা তৈরি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
ঘুমের অভাব রক্তচাপ বাড়ায় ও শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা সরাসরি হৃদরোগের কারণ হতে পারে। সেই সঙ্গে বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) ব্যাহত হয়, কোলেস্টেরল ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ে, ওজনও বাড়ে—সব মিলিয়ে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ঘুমের সময় নিয়ে একেকজনের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। কারো ৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন হয়, আবার কেউ ৫ ঘণ্টার ঘুমেই সুস্থ থাকেন।
সবার জন্য ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম বাধ্যতামূলক—এমনটা বলা যায় না। তবে এই সত্য অস্বীকার করা যায় না যে ঘুম শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।অনেকে মনে করেন, সারা সপ্তাহ কম ঘুমিয়ে ছুটির দিনে অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। একদিনের ঘুমের ঘাটতি অন্যদিন পুষিয়ে নেওয়া যায় না।
বরং এভাবে চলতে থাকলে শরীরের জৈব-ঘড়ির স্বাভাবিক ছন্দের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সবশেষে বলাই যায়, হৃদরোগ প্রতিরোধে ঘুম কোনোভাবে উপেক্ষা করার বিষয় নয়, বরং তা সুস্থ জীবনধারার অপরিহার্য অংশ।
ইউআর
আপনার মতামত লিখুন :