ঢাকা: দেশের ১১ কোটির বেশি ভোটারের তথ্য সংরক্ষণের কাজটি আরও শক্তিশালীভাবে নিরাপত্তা দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য বর্তমান সার্ভারের আপডেটসহ নতুন করে দুই জেলায় সার্ভার বসানোর পরিকল্পনা করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্টানটি। প্রথমে গাজীপুরের কালিয়াকৈর পরবর্তিতে যশোর হাইটেক পার্কে নতুন দুটি সার্ভার বসানো হবে।
ইসি সূত্র জানায়, বর্তমানে পুরোন সার্ভার অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৮ সালে ভোটার হওয়া ব্যাক্তিদের ইসির দুই নাম্বর ফরম পেতে সমস্যা হয়। এতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় ভোটারদের। নতুন সর্ভার হলে এ সমস্যা আর থাকবেনা। এছারা ঢাকার বাহিরে সার্ভার রাখলে প্রকৃতিক দুর্যোগে সার্ভারের তথ্য নষ্ট হওয়ার সুযোগ কম থাকবে। এক সাভারের সমস্যা হলে আরেক সার্ভার থেকে তথ্য নেওয়া যাবে।
এ বিষয়ে এনআইডি বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, এনআইডি’র চলমান সকল কার্যক্রম চলছে ২০১১ সালের একটি সার্ভারের মাধ্যমে। পুরাতন সার্ভার দিয়ে এনআইডি ও পার্টানারদের সার্ভিসসহ অন্যান্য কার্যক্রম করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ সার্ভারের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সব কাজ একসাথে করতে গেলে সার্ভার স্লো হয়ে যায়।
তিনি বলেন, বর্তমান সার্ভারটি ৪টি অর্গানাইজেশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু চলমান এ সার্ভারটি এখন কয়েক হাজার অর্গানাইজেশনকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যেমন এর আগে ইভিএম ছিল না, ইভিএমের পুরো কাস্টমাইজেশন হচ্ছে এ সার্ভারের মাধ্যমে। ভোটার তালিকার সাথে সামঞ্জস্য করে ইভিএম এর কাস্টমাইজেশন করা হচ্ছে। এজন্যই মাঝে মাঝে সার্ভার স্লো থাকে। তারপরও সার্ভারের চাপগুলো আমরা টেকনিক্যালি নিয়ন্ত্রণ করি।
মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, নিজেদের সক্ষমতায় সার্ভারের যে সমস্যা ছিলো সেগুলো সমাধান করেছি। এতো সমস্যার পরও আমরা সার্ভার মেইনটেইনেন্সে কোন বিদেশি কোম্পানির সহযোগিতা নেইনি। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সার্ভার তথা এনআইডির সকল কার্যক্রম থেকে বিদেশি সম্পৃক্ততা পরিহার করেছি। এটা আমাদের বড় অর্জন।
র্স্মাট কার্ড নিয়ে সাইদুল ইসলাম বলেন, বাকি ভোটারদের স্মার্ট কার্ড দিতে ইতোমধ্যেই আইডিএ-২ প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে সেই কার্ডগুলো দেশেই তৈরি করা হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সবার হাতে স্মার্ট পৌছে দিব আমরা। দেশের উৎপাদিত কার্ড নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।
অনলাইন সেবা চালু হওয়ার পর সংশোধনের ফাইল আটকে থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে তো ফাইলের কোন খবর থাকতো না। এনআইডি’র নিজস্ব মনিটরিং টিম রয়েছে। এছাড়া ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি মনিটরিং টিম করে দেয়া আছে। মনিটরিং টিমটা কাজ শুরু করছে। তারপরও আমি বলবো, যেকোন কাজ লাইনে আনতে সময় লাগে। সিস্টেমের কারণে সবাই ভালো হতে বাধ্য হচ্ছে।
এনআইডির র্কমর্কর্তারা জানান, একদিকে এনআইডির সার্ভারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিকেন্দ্রিকরণ করা হচ্ছে। এরইমধ্যে অনলাইন সিস্টেম নিয়ে আসা হয়েছে এবং যারাই এনআইডি সেবার ব্যত্যয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ কাজগুলো যেকোন অর্গানাইজেশন করতে পারলে তারা সাফল্য পাবেই। ইসি ঠিক এই কাজগুলোই করেছে।
এনআইডির জনবল নিয়ে এনআইডি’র কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে এনআইডি’র কর্মকর্তা ১৫ জন। ১৫ জন মিলে ১১ কোটির দায়িত্ব নিয়েছে। এই ১৫ জনের মধ্যে থেকেই অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করে। এতো অল্প জনবল নিয়ে কিভাবে বিশাল এ কর্মযজ্ঞটি পরিচালনা করছি এবং ইভিএমগুলোও মেইনটেইনেন্স করা হচ্ছে, সেটাও ভাবার বিষয় বলে জানায় এনআইডি র্কমকর্তরা।
উল্লেখ্যে, একনেকে ইসির নতুন প্রকল্প ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পটি পাশ হওয়ায়। ইসির এনআইডি কার্যক্রম আরো শক্তিশালি হচ্ছে।
সোনালীনিউজ/এইচএন
আপনার মতামত লিখুন :