ঢাকা : ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি কিংবা বাংলা ৮ ফাল্গুন রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দুর্বার আন্দোলনে নামেন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকসহ আরো অনেকে। আবার বছর ঘুরে এলো সেই ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ওইসব ভাষা শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা।
পরে এই অর্জনের পথ ধরেই শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং এর ফলে একাত্তরে ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন-সার্বভৌম একটি দেশ, বাংলাদেশ। আমরা অর্জন করি লাল-সবুজে খচিত একটি স্বাধীন দেশের পতাকা।
আর আজ ওই লাল-সবুজের জমিনে দাঁড়িয়ে জাতি গোটা ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে স্মরণ করবে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবনদানকারী সব ভাষা-শহীদকে।
মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেওয়ার এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা আজ পর্যন্ত আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বত্র বাংলার প্রচলন নিশ্চিত করতে পারিনি। ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিচ্ছি।
১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, এরপর ১৯৯৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম করেছে অথচ আমরা বাংলা লিখছি যে যার ইচ্ছামতো। প্রিয় বাংলা ভাষাকে প্রকৃত মর্যাদা দিতে আমাদের এই স্বেচ্ছাচারিতা থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। বৈশ্বিক প্রয়োজনে আমাদের ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষাও শিখতে হবে।
একইসঙ্গে মাতৃভাষার চর্চাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে হবে।
কঠোর নীতিমালার মাধ্যমে এখনই রুদ্ধ করতে হবে গুরুচণ্ডালি দোষে বাংলা ভাষার ব্যবহার। প্রমিত বাংলা শেখা ও এর ব্যবহারে জোর দিতে হবে।
আবার শুধু সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারের আইন প্রণয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। ভাষা-শহীদদের আত্মত্যাগের মর্যাদা দিতে হবে বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে। আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারযন্ত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাতৃভাষা বাংলার শুদ্ধ চর্চার দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি যত্নবান হতে হবে।
আর তখনই আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে গর্ব করতে পারবো বিশ্ব দরবারে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :