ঢাকা : কর ফাঁকিসহ নানা অনিয়ম বন্ধে গত বছরের ১৯ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গঠন করে সাত সদস্যের টাস্কফোর্স। এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের পরিচালক মো. শাব্বির আহমদের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটি মাত্র ৬ মাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকি বন্ধ এবং কর আদায়ে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাস্কফোর্সের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য জানান, গত বছর কাজ শুরুর সময় ১ লাখ ৭৬ হাজার নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৭৮ হাজার কর নিবন্ধন সনদ টিআইএন নিয়েছিল। বাকি ৯৮ হাজার কোম্পানি টিআইএন-এর বাইরে ছিল। অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কর আদায় হতো না।
টাস্কফোর্স এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজ শুরুর মাত্র ছয় মাসে ৯৮ হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫ হাজার প্রতিষ্ঠানকে টিআইএন’র আওতায় নিয়ে এসেছে। ফলে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর ৮০ শতাংশই করের আওতায় এসেছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে আঞ্চলিক কর অফিসগুলো নোটিশের দেওয়ার মাধ্যমে রিটার্ন দেওয়ার জন্য বলছে। এদের একটি বড় অংশ ভালো রিটার্ন দিচ্ছে বলে জানান টাস্কফোর্স সদস্য।
তিনি বলেন, আগে বছরে করপোরেট রিটার্ন বৃদ্ধির হার মাত্র ১ শতাংশ ছিল। সেটি গত ৬ মাসে ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে বাকি ২৩ হাজার প্রতিষ্ঠানকে টিআইএন’র আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব।
গত ১৯ আগস্ট টাস্কফোর্স গঠনে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি ইস্যু করা হয়।
সাত সদস্যের টিমের অন্য সদস্যরা হলেন-বৃহৎ করদাতা ইউনিটের যুগ্ম কর কমিশনার দুলাল চন্দ্র পাণ্ডে, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের উপপরিচালক ওয়াকিল আহমদ, উপপরিচালক মিজ সুলতানা হাবীব, এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মো. মনিরুজ্জামান, কর অঞ্চল-২-এর সহকারী কর কমিশনার মো. জোনায়েদ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চলের সহকারী কর কমিশনার মিজ ফারহাত তাসমীম।
টাস্কফোর্সের কাজ হলো-বাংলাদেশে নিবন্ধিত যেসব কোম্পানি টিআইএন গ্রহণ বা আয়কর রিটার্ন দাখিল করছে না সেসব কোম্পানি চিহ্নিতকরণ, তালিকা প্রণয়ন এবং মাঠপর্যায়ের দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে সব কোম্পানিকে আয়করের আওতায় আনার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, জাল অডিট রিপোর্ট দাখিল রোধকল্পে প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা প্রণয়ন, কোম্পানি করদাতাদের কর নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল এবং অথেনটিক অডিট রিপোর্ট দাখিল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকলে তা চিহ্নিত করা এবং সমাধানের বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ প্রদান, কোম্পানির টিআইএন গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিল নিশ্চিতকরণে এবং কর বিভাগের কাছে জাল অডিট রিপোর্ট দাখিল বন্ধে যেসব কার্যক্রম গৃহীত হচ্ছে তা অগ্রগতি মনিটর করে রিপোর্ট প্রদান।
টিআইএনবিহীন করদাতা চিহ্নিকরণসহ বিভিন্ন কাজে ডাটা ম্যাচিং ও অন্যান্য আইটি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কর তথ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবা উইং এবং আইসিটি উইং টাস্কফোর্সকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :