অপ্রাপ্তবয়স্করাও নিচ্ছে টিকা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২১, ০৩:১২ পিএম
অপ্রাপ্তবয়স্করাও নিচ্ছে টিকা

ঢাকা : দেশে করোনা টিকার চাহিদামতো জোগান মিলছে না। সর্বশেষ গত শুক্রবার ও শনিবার (৩ জুলাই) দেশে এসেছে ২৫ লাখ ডোজ টিকা। অনেকেই কয়েক মাস আগে নিবন্ধন করেও টিকা পাচ্ছেন না। সরবরাহ বন্ধ থাকায় কিছুদিন টিকাদান কার্যক্রম বন্ধও রাখতে হয়। গত কয়েক দিন থেকে আবারো নতুন করে টিকাদান শুরু হয়েছে।

এদিকে যেখানে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কিছু পেশার লোকজন ছাড়া ৪০ বছরের নিচে সাধারণ কোনো নাগরিক টিকার জন্য নিবন্ধনই করতে পারবেন না সেখানে শনিবার (৩ জুলাই) কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীকে টিকা নিতে দেখা গেছে।

এদিন দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) টিকাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এখানে আজ ছয় থেকে আটজন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীকে ফাইজারের টিকা নেওয়ার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু তারা কীভাবে টিকা নিচ্ছে সেটা জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ বিষটি এড়িয়ে যায়।

টিকাকেন্দ্রে দায়িত্বরত চিকিৎসক (উপ-পরিচালক) খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি মাত্র খেয়াল করলাম। কীভাবে তাদের টিকার নিবন্ধন হলো সেটি দেখা হবে।’ কয়েকজন টিকা কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রভাবশালী পরিবারের কয়েকজন শিশু টিকা নিচ্ছে জোর করেই। উপর লেভেল থেকে তাদের বিষয়ে তদবির রয়েছে।’

এদিকে অপ্রাপ্তবয়স্ক যারা টিকা নিয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ওইসব কিশোর-কিশোরীদের তো জাতীয় পরিচয়পত্রই নেই। তাহলে টিকার নিবন্ধন কীভাবে হলো? অথবা তাদের টিকার নিবন্ধন কার্ড কার নামে? দেখতে চাইলে তারা দেখায়নি। টিকা নেওয়ার পর সবাই দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।

গতকাল বিএসএমএমইউতে চার শতাধিক মানুষকে ফাইজারের করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। এই কেন্দ্রের পাশাপাশি আরো সাতটি কেন্দ্রে এদিন ফাইজারের টিকা দেওয়ার তথ্য জানিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

টিকাকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ফাইজারের টিকা নেওয়ার জন্য মানুষের আগ্রহ অনেক। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ টিকা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এর মধ্যে অল্প বয়সের এসব শিশু টিকা নিয়েছে, যা উপস্থিত সবাইকে অবাক করেছে।

বিএসএমএমইউয়ের দুটি বুথে একসঙ্গে চারজন করে গ্রহীতাকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। সকালে গণমাধ্যমের ভিড় ছিল। দুপুরের পরে যখন তাদের উপস্থিতি ছিল না তখন ওই ঘটনা ঘটে।

সেখানে টিকা নেওয়ার পর একরামুজ্জামান নামে একজন বলেন, ‘হঠাৎ সিরিয়ালের মাঝখানে কিছু বাচ্চা প্রবেশ করলো। তাদের টিকা দেওয়া হলো। কিছু বুঝতে পারলাম না। পরে নার্সকে জিজ্ঞাস করলে, বলে স্যারের নির্দেশ। পলিটিক্যাল লোক।’

মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বিএসএমএমইউ-র ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জানা যায়নি।

শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদিও ফাইজারের টিকা ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছরের মে মাসে শিশুদের এ টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) কর্তৃপক্ষ। তারও আগে ১২ বছর বয়সী শিশুদের টিকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কানাডা সরকার।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Link copied!