গণপরিবহন চলাচল শুরু, সড়ক ফিরেছে পুরনোরূপে

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১, ১০:২৬ এএম
গণপরিবহন চলাচল শুরু, সড়ক ফিরেছে পুরনোরূপে

ফাইল ছবি

ঢাকা : সারাদেশে লকডাউন শিথিলের খবরে পুরনো রূপে ফিরেছে সড়কগুলো। গণপরিহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চাপ বেড়েছে সড়কে। মার্কেট, শপিংমল বন্ধ থাকলেও সড়কের আশপাশের দোকান ছিল খোলা। ফেরিঘাটেও ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে। যদিও বুধবার মধ্যরাত থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু করেছে। আজ থেকে ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল করবে।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের জারি করা ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধের শেষ দিন ছিল বুধবার। এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, পান্থপথ, ধানমন্ডি, শাহবাগ, মগবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে রিকশা, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাসের বেশ চাপ। কোথাও কোথাও যানজটও সৃষ্টি হয়। প্রধান সড়কের পাশাপশি অলিগলিতে খুলেছে দোকানপাট। ফুটপাত ও কাঁচাবাজারেও মানুষের চলাচল বেড়েছে। বেশির ভাগ মানুষই বাইরে বেরিয়ে পড়েছে।

ফার্মগেটে পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে দায়িত্বরত তেজগাঁও ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট হরপ শিকদার বলেন, রাস্তায় অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ বেশিসংখ্যক যানবাহন নেমেছে। লোকজন নানা জরুরি প্রয়োজনের অজুহাত দেখিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার কথা জানাচ্ছেন। তাদের কাছে যৌক্তিক কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হচ্ছে। গত কয়েকদিন সড়কে বাড়িফেরা মানুষের চাপ কম থাকলেও গতকাল চাপ বাড়ে আমিনবাজার ও গাবতলীতে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও ট্রাকের চাপ। কর্মজীবীদের অনেকে বাড়ির উদ্দেশে আমিনবাজারে এসে জড়ো হচ্ছেন। তাদের মধ্যে কেউ মাইক্রোবাসে, কেউ প্রাইভেটকারে আবার কেউ ট্রাকে করেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। বেশিরভাগ যাত্রীই সরাসরি গাড়ি না পেয়ে মোটরসাইকেলে ফেরি ঘাট পর্যন্ত যাচ্ছেন।
 
কঠোর লকডাউনের শেষ দিনে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশ পথ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-পথের ফেরিগুলোতে বেড়েছে যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা। ঘরে ফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটেও।

সকাল থেকে বিভিন্ন উপায়ে যাত্রীরা ঘাটে এসেছেন এবং ফেরি পার হয়েছেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ কিছুটা কমে যায়। ফেরি পার হতে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, গরু ও পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে ব্যক্তিগত যানবাহন পারাপারের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। কঠোর বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও সবচেয়ে বেশি পারাপার হয়েছে প্রইভেটকার ও মাইক্রোবাস।

ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে ​বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের  ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহম্মেদ বলেন, এই নৌ-পথে বর্তমানে ১১টি ফেরি চলছে। বর্তমানে ঘাটে শতাধিক ছোটবড় যান রয়েছে। সকালে ভিড় থাকলেও এখন নেই। ঘাট এলাকা স্বাভাবিক।

দৌলতদিয়া বিআইডব্লিউটিসি’র সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম জানান, আর কয়েকদিন বাকি ঈদের। এ কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে যানবাহন ও যাত্রীদের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে পণ্যবাহী ট্রাকের চাইতে গরুবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহন পারাপার হচ্ছে বেশি। সেইসঙ্গে যাত্রী পারাপারও বেশি হচ্ছে। এ নৌ-রুটে ১৪টি ছোট বড় ফেরি চলাচল করছে।

উল্লেখ্য, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে চলমান ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ শিথিল করা হয়েছে। ঈদের পর আবারো ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ বাস্তবায়নে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১ জুলাই থেকে সারা দেশে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ গতকাল শেষ হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলেও ঈদ ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা আজ থেকে কার্যকর হবে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Link copied!