ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের পে-স্কেলের পার্থক্য

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১, ০৩:২৭ পিএম
ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের পে-স্কেলের পার্থক্য

ঢাকা : অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলকে ‘চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫’ নামে অভিহিত করা হয়। এটি প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালের ১ জুলাই।

অষ্টম জাতীয় পে-স্কেল প্রকাশের পর তা বাস্তবায়নে কিছু অসঙ্গতি দেখা যায়। সর্বনিম্ন ৮২৫০ টাকা বেতন এবং সর্বোচ্চ ৭৮০০০ টাকা নির্ধারিত বেতন রেখে পে-স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়ন করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন ১ : ১০ এর পরিবর্তে ১:৪ করা উচিত ছিল যা আন্তজার্তিক শ্রম আইনকে নির্দেশ করে। নিম্নে ভারত ও পাকিস্তানসহ দেশের জাতীয় বেতন স্কেলের ধাপ ব্যবধান বর্ণনা করার মাধ্যমে বাংলাদেশের পে-স্কেলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবো।

বাংলাদেশের পে স্কেলে ২০টি গ্রেড রয়েছে। সর্বনিম্ন ৮২৫০ এবং সর্বোচ্চ ৭৮০০০ টাকা : ৭৮০০০ ৬৬০০০ ৫৬৬০০ ৫০০০০ ৪৩০০০ ৩৫৫০০ ২৯০০০ ২৩০০০ ২২০০০ ১৬০০০ ১২৫০০ ১১০০০ ১১০০০ ১০২০০ ৯৭০০ ৯৩০০ ৯০০০ ৮৮০০ ৮৫০০ ৮২৫০

৫% হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি রাখা হয়েছে প্রতিটি ধাপের বিপরীতে। এক ধাপ থেকে অন্যধাপে বেতন বৃদ্ধি দেখুন: ২৫০ ৩০০ ২০০ ৩০০ ৪০০ ৫০০ ৮০০ ৩০০ ১২০০ ৩৫০০ ৬০০০ ১০০০ ৬০০০ ৬৫০০ ৭৫০০ ৭০০০ ৬৫০০ ৯৫০০ ১২০০০।

চিত্রে দেখুন ১০ গ্রেডের আগ পর্যন্ত ধাপগুলো কত বড় এবং ১০ এর পরের গুলো ছোট। যা সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ বেতন বৃদ্ধির পার্থক্য ৪৮ গুন। আরও একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় ২০ ধাপের মধ্যে ২০নং ধাপ থেকে ১১নং ধাপ পর্যন্ত ধাপের দূরত্ব গড়ে ৪% অন্যদিকে ১০-১ নং ধাপ পর্যন্ত ধাপের দূরত্ব গড়ে ২০% যা অতি বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।

অন্যদিকে ভারতের পে-স্কেলে ১৮টি গ্রেড রয়েছে : সর্বনিম্ন ১৮০০০ এবং সর্বোচ্চ ২৫০০০০ রুপি। ২৫০০০০ ২২৫০০০ ২০৫৪০০ ১৮২২০০ ১৪৪২০০ ১৩১১০০ ১২৩১০০ ৭৮৮০০ ৬৭৭০০ ৫৬১০০ ৫৩১০০ ৪৭৬০০ ৪৪৯০০ ৩৫৪০০ ২৯২০০ ২৫৫০০ ২১৭০০ ১৯৯০০ ১৮০০০

এক ধাপ থেকে অন্যধাপে বেতন বৃদ্ধি দেখুন : ২৫০০০ ৪২৮০০ ৩৮০০০ ১৩১০০ ৮০০০ ৪৪৩০০ ১১১০০ ১১৬০০ ৩০০০ ৫৫০০ ২৭০০ ৯৫০০ ৬২০০ ৩৭০০ ৩৮০০ ১৮০০ ১৯০০।

সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ ধাপগুলো কাছাকাছি রয়েছে দু’একটি ছাড়া। যা সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ বেতন বৃদ্ধির পার্থক্য ১৩.১৫ গুন। আরও একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় ১৮ থেকে ১ নং ধাপ পর্যন্ত ধাপের দূরত্ব গড়ে ৭.৩৪% । যা প্রতিটি ধাপে প্রায় সমান। ১৮টি ধাপ হওয়ার পরও ধাপ ব্যবধান বজায় রেখেছে ফলে কোন বেতন বৈষম্য সৃষ্টি হয়নি। যা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির গতি বজায় রেখেছে।

পাকিস্তানে পে-স্কেলে ২২টি গ্রেড রয়েছে : সর্বনিম্ন ৯১৩০ এবং সর্বোচ্চ ৮২৩৮০ পাকিস্তানি রুপি। ৮২৩৮০ ৭৬৭২০ ৬৯০৯০ ৫৯২১০ ৩৮৩৫০ ৩০৩৭০ ১৮১৯০ ১৬১২০ ১৫১৮০ ১৪২৬০ ১৩৩২০ ১২৫৭০ ১২১৬০ ১১৭৭০ ১১৩৮০ ১০৯৯০ ১০৬২০ ১০২৬০ ৯৯০০ ৯৬১০ ৯৩১০ ৯১৩০

এক ধাপ থেকে অন্যধাপে বেতন বৃদ্ধি দেখুন : ৫৬৬০ ৭৬৩০ ৯৮৮০ ২০৮৬০ ৭৯৮০ ১২১৮০ ২০৭০ ৯৪০ ৯২০ ৯৪০ ৭৫০ ৪১০ ৩৯০ ৩৯০ ৩৯০ ৩৭০ ৩৬০ ৩৬০ ২৯০ ৩০০ ১৮০।

দু’একটি ধাপ ছাড়া বাকিগুলো মেনে নেয়া যায়। যা সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ বেতন বৃদ্ধির পার্থক্য ৩১.৪৪ গুন। আরও একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় ২২ থেকে ১নং ধাপ পর্যন্ত ধাপের দূরত্ব গড়ে ১১.৫৩% । যা প্রতিটি ধাপে প্রায় সমান। ২২টি ধাপ হওয়ার পরও ধাপ ব্যবধান বজায় রেখেছে ফলে কোন বেতন বৈষম্য সৃষ্টি হয়নি এবং পার্থক্য এত গুন হওয়া সত্ত্বেও প্রতিটি ধাপে একই ব্যবধান নিশ্চিত করা হয়েছে।

অন্যান্য দেশে গ্রেড সংখ্যা বেশি এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের শতাংশ পার্থক্য এত বেশি হওয়া সত্ত্বেও বৈষম্য হয়নি কারণ গ্রেডের একধাপ হতে অন্য ধাপের দূরত্ব উচ্চগ্রেড হতে নিম্নগ্রেড পর্যন্ত গড় কাছাকাছি হওয়ায় কোন বৈষম্য তৈরি হয়নি। বাংলাদেশের পে-স্কেলে সর্বোচ্চ ৭৮০০০ এবং সর্বনিম্ন বেতন ৮২৫০ টাকা রয়েছে প্রকৃত পক্ষে আসলে তা কোন বড় বৈষম্য নয়। কর্মকর্তাদের এক গ্রেড থেকে অন্য গ্রেডের পার্থক্য যা ১-১০ গ্রেড পর্যন্ত রয়েছে ২০% গড়ে, অন্যদিকে কর্মচারীদের ১১-২০ গ্রেড পর্যন্ত গ্রেড হতে গ্রেড ব্যবধান গড়ে ৪% মাত্র। 

সোনালীনিউজ/আইএ

Link copied!