দেশে ১৫০ আফগান আসছেন চার্টার্ড ফ্লাইটে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২১, ১২:৪৩ পিএম
দেশে ১৫০ আফগান আসছেন চার্টার্ড ফ্লাইটে

ছবি (প্রতীকী)

ঢাকা : এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের (এইউডব্লিউ) ১৫০ আফগান ছাত্রী আগামীকাল আসছে দেশে। করোনার কারণে এক বছর আগে নিজ দেশ  ফিরে গিয়েছিলেনন তারা। আগামীকাল বুধবার (২৫ আগস্ট) একটি বিশেষ উড়োজাহাজে (চার্টার্ড ফ্লাইট) করে ঢাকায় ফিরছেন। 

এইউডব্লিউর পক্ষ থেকে এই উড়োজাহাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকায় ফেরার লক্ষ্যে ২৩ আগস্ট থেকে তারা কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছেন। ঢাকায় নামার পর তারা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম মেনে ফিরবেন চট্টগ্রামের ক্যাম্পাসে।

এইউডব্লিউর এক কর্মকর্তা বলেন, পুরো বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়তার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এজন্য প্রতিবেদনে কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে তালেবানরা আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তান দখল সমাপ্ত ঘোষণা করার অনেক আগে থেকেই দেশের মানুষ খারাপ পরিস্থিতির বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাই গত জুন থেকে সুযোগ বুঝে অনেক আফগান দেশত্যাগ করছিলেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, চট্টগ্রামে অবস্থিত এইউডব্লিউতে অধ্যয়নরত দেড় শতাধিক আফগান ছাত্রী গত জুলাই থেকে বাংলাদেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জুলাই মাসে তারা বাংলাদেশের ভিসা পাওয়ার লক্ষ্যে কাবুলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। ততদিনে দেশে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের যুদ্ধ লেগে গেছে। তালেবানরা প্রাদেশিক অঞ্চল থেকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছিল। যুদ্ধাবস্থার মধ্যে নিরাপত্তার ঝুঁকির কারণে বাংলাদেশ দূতাবাসের আর ভিসা নেওয়া সম্ভব হয়নি তখন।

এইউডব্লিউর ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে এলে শেষ পর্যন্ত উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ থেকে দেড়শ আফগান ছাত্রীর জন্য বাংলাদেশের ভিসার ব্যবস্থা করা হয়। আর এভাবেই শিক্ষা নিয়ে ঝুঁকিতে থাকা আফগান ছাত্রীরা বাংলাদেশে ফেরার ব্যবস্থাটি হয়ে যায়।

এইউডব্লিউতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া নারীদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উন্নত দেশের সচ্ছল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখানে বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠানও এখানে বৃত্তি দিয়ে থাকে। বৃত্তির অর্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের মিলিন্ডা অ্যান্ড গেটস ফাউন্ডেশন। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্য থেকেও বৃত্তির অর্থের একটি বড় অংশ আসে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মূলত আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গার মতো ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কয়েকশ ছাত্রীর এখানে উচ্চশিক্ষার বেশিরভাগ ব্যয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো বহন করে থাকে। নগরীর এমএম আলী রোডে অবস্থিত এইউডব্লিউর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের এক হাজারেরও বেশি ছাত্রী লেখাপড়া করছেন বলে একাডেমিক বিভাগ থেকে জানা গেছে।

প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ আবাসিক হলেও করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যান। ফলে গত বছরের এপ্রিল থেকে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়। প্রতিষ্ঠানটির আচার্য হলেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী, বিশিষ্ট আইনজীবী শেরি ব্লেয়ার।

এদিকে ফেরানো হচ্ছে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদেরও : বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম-নীতি মেনে আফগান ছাত্রীদের ফেরানোর পাশাপাশি উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করা ছাত্রীদেরও ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এইউডব্লিউ। কিছু রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী ইয়াঙ্গুনেও আছেন। সব মিলিয়ে শতাধিক রোহিঙ্গা ছাত্রী শিগগিরই ফিরছেন এই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে।

সোনালীনিউজ/এসএন

Link copied!