ঢাকা : দেশে তৃতীয় ধাপে ১ হাজার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে এক হাজার সাতটি ইউপি ছাড়াও একই দিনে ১০টি পৌরসভায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ৩৭টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ করা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
পরিস্থিতি সামলে রাখতে নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। পাশাপাশি সবপক্ষের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব নির্বাচনী সহিংসতা রোধ করার জন্য।
সহিংসতা ঘটতে পারে এমন ‘পকেটগুলো’ চিহ্নিত করে আগাম গোয়েন্দা তথ্য নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে নজরদারি বাড়ানো ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে ইসি।
নির্বাচনী পরিবেশ ভালো রাখতে রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, সমর্থকসহ সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন সিইসি হুদা।
ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশৃঙ্খলা দূরীকরণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্য, নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমরা মাঠে রয়েছেন।
ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে ১০০ জন চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদের সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। তৃতীয় ধাপে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মোট ৫৬৯ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান ছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে ৩৩৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩২ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। অন্যদিকে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও মাঠে তেমন সক্রিয় নয়। তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করছেন বলে অনেকের অভিমত। ফলে এ নির্বাচনে বৃহৎ দল হিসেবে একমাত্র আওয়ামী লীগই অংশ নিয়েছে। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ করে আসছেন কিন্তু দল অন্য নেতাকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটযুদ্ধ চলছে।
ইসি জানায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ছাড়া এই ধাপের ভোটে লড়ছেন ৫০ হাজার ১৪৬ জন। চেয়ারম্যান পদে চার হাজার ৪০৯, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১১ হাজার ১০৫ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৪ হাজার ৬৩২ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এই ধাপের ভোটে কেন্দ্র রয়েছে ১০ হাজার ১৫৯টি, ভোটকক্ষ ৬১ হাজার ৮৩০টি। ভোটার সংখ্যা ২ কোটি এক লাখ ৪৯ হাজার ২৭। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসারের ২২ জনের ফোর্স রাখা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, আনসার, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স।
এ ছাড়া মাঠে রয়েছেন পাঁচ শতাধিক বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ইতোমধ্যে দুই ধাপের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ ধাপে ৮৪০ ইউপিতে ২৬ ডিসেম্বর ও পঞ্চম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :