আকাশছোঁয়া বিদেশি ফলের দাম, দেশীয় ফল ও দুধ-ডিমে ভরসা মধ্যবিত্তের

  • সুফিয়ান ফারাবী | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২, ০৩:৫৪ পিএম

ঢাকা : আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে সকল ধরনের আমদানিকৃত দ্রব্যের মূল্য। কোনটা আকাশ ছুঁয়েছে, কোনটা ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে। দেশে আমদানিকৃত ফলের দাম বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশি। পুষ্টিময় এসব খাবারের মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা‌। এমতাবস্থায় দেশীয় ফলমূল ও শাকসবজি থেকে বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ও শিশুদের পুষ্টির জোগান দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। 

রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রঙিন লাইটের আলোয় শোভা পাচ্ছে নানা রঙের ফল। বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেটজাত করে বিক্রির সকল আয়োজন সম্পন্ন। ‌কিন্তু আশানুরূপ ক্রেতার দেখা মিলছে না। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য মান কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে আমদানিকৃত সকল ধরনের ফলের।

ফল

ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন ক্রেতারা এসে দরদাম করছেন ঠিকই কিন্তু ক্রয় করতে পারছেন না। অধিকাংশ ফলই ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে। 

আব্দুল মালেক নামক জনৈক ক্রেতা এসেছিলেন আপেল ক্রয় করতে। দাম শুনার পর সিদ্ধান্ত পাল্টালেন। আপেল ক্রয় না করে ফেরার পথে কথা হল আমাদের সঙ্গে। কি কি ক্রয় করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসছিলাম আপেল ও পেঁপে কিনতে। কিন্তু দাম শুনে আর কেনার সাহস পেলাম না। 

শিশু, বয়োবৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ মানুষদের দেশীয় ফলমূল ও শাকসবজির মাধ্যমে নিয়মিত সুষম খাবার নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন সুস্থ ও স্বতেজ থাকতে চাইলে পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প কোন নেই। তবে শুধুমাত্র বিদেশি ফলের মাঝেই পুষ্টি খোঁজার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে দেশীয় ফলমূলের প্রতি দৃষ্টি দিলে পুষ্টিহীনতার সমস্যায় ভুগতে হবে না।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার খলিলুর রহমান, ছবি সোনালীনিউজ।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার খলিলুর রহমান সোনালীনিউজকে বলেন, বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে এটা ঠিক তবে দেশীয় ফলেও রয়েছে পর্যাপ্ত পুষ্টি। এবং এগুলোর দাম হাতের নাগালে। দুধ ডিম সহ এসব দেখিও পুষ্টিকর ফল খেলে আশা করি রোগী, শিশু ও গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির অভাব থাকবে না। 

তিনি আরও বলেন, সুস্থ থাকার জন্য দেশে উৎপাদিত ফলমূল, শাক-সবজি ও নিয়মিত দুধ, ডিম খাওয়ার বিকল্প নেই। এছাড়া আমরা যখন বাজার থেকে ফলফলাদি নিয়ে আসি তখন কিছু সময়ের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেগুলোকে জীবাণু ও ফরমালিন মুক্ত করে নিতে হবে। মোটকথা পুষ্টির জোগান দেয় এমন খাবার আমাদের দেশেই পর্যপ্ত পরিমাণে উৎপাদিত হয়। সুতরাং বিদেশি ফলের উপর নির্ভশীলতা কমিয়ে দেশীয় পুষ্টিকর খাবারে আরও দৃষ্টি দিতে হবে। 

গত একযুগে বাংলাদেশের কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। দেশীয় ফলের তালিকায় স্থান পেয়েছে, সবুজ মালটা, ড্রাগন, সুদুর আরবের তিন ফল ও খেজুরসহ আরো নানা ধরনের বিদেশি ফল।‌ বিশেষজ্ঞদের প্রত্যাশা, অচিরেই হয়তো ফল আমদানি করার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে আসবে। দেশে উৎপাদিত ফলের মাধ্যমেই চাহিদার পুরোটাই জোগান দেয়া সম্ভব হবে।

সোনালীনিউজ/এসএফ/এমএএইচ

Link copied!