ঢাকা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) যানবাহন সংক্রান্ত ৫১টি সেবার মূল্য (ফি) বাড়িয়েছে। এর ফলে যানবাহনের মালিকদের খরচ বাড়বে বহুলাংশে।এখন পরিবহন মালিকরা অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে বাড়াতে চান বাস ভাড়া। তবে যাত্রী অধিকার সংশ্লিষ্টরা বাস ভাড়া বাড়ানোর বিরোধিতা করছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) যানবাহন সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
বিআরটিএ’র ৫৩ ধরনের সেবা মূল্যের মধ্যে ৫১টির ফি বাড়িয়েছে। কেবলমাত্র নিবন্ধন ফি বাড়েনি মোটরসাইকেল ও অসমর্থ ব্যক্তির উপযোগী মোটরযানের।
বিআরটিএ ১২টি সেবার মূল্য ১০০ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়েছে। বৃদ্ধির সর্বনিম্ন হার প্রায় ১৩, সর্বোচ্চ ৩০০ শতাংশ। আর ১০টি সেবার ক্ষেত্রে নতুন ফি আরোপ করা হয়েছে।
লাইসেন্সের আবেদন থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে ৯ ধরনের ফি রয়েছে—শিক্ষানবিশ লাইসেন্স, শিক্ষানবিশ লাইসেন্স নবায়ন, প্রতিবার দক্ষতা যাচাই পরীক্ষা (অকৃতকার্য হলে), লাইসেন্স ইস্যু ফি, বার্ষিক লাইসেন্স ফি, বার্ষিক বিলম্ব ফি, ঠিকানা পরিবর্তন, শ্রেণি বা ধরন পরিবর্তন, প্রতিলিপি ফি ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে ৩৩ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত।
সব মিলিয়ে এক ব্যক্তির এখন শিক্ষানবিশ থেকে শুরু করে অপেশাদার লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড নিতে সাড়ে ৩ হাজার টাকার মতো লাগবে, যা এত দিন ৩ হাজার ১০০ টাকায় হয়ে যেত।
বাস মালিকরা যা বলছেন, যানবাহনের নিবন্ধনের ফি ছাড়াও প্রতিবছর এর মালিকদের সড়ক কর, অগ্রিম আয়করসহ নানা কর দিতে হয়। যাত্রীবাহী ৫২ আসনের একটি বাসের নিবন্ধন ফি ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, যা ছিল ১৭ হাজার ২৫০ টাকা। আন্তজেলা পরিবহনের চলাচলের অনুমতির ফি শ্রেণিভেদে ছিল বছরে ৫২০ থেকে ১ হাজার ৬৯০ টাকা। এখন তা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।
রাজধানীতে চলাচলকারী এক পরিবহন মালিক শহিদুল ইসলাম বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর লাভ হচ্ছে না। তারমধ্যে যানজটের কারণে অধিকাংশ বাস একাধিক টিপও দিতে পারে না। দিনশেষে তেমন কোনো লাভ থাকে না। এরপর এত ফি বাড়ায় আমাদের উপরে চাপ বাড়বে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সাংবাদিকদের বলেন, গণপরিবহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও উপকরণের দাম বেড়েছে। সরকারও ফি বাড়াল। এখন বাসের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে চিঠি লিখতে হবে।
তবে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে যাত্রীদের বিষয়টিও দেখা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভাড়া বাড়ালে মানুষ দিতে পারবে কি না, সেটাও ভাবতে হবে। পরিবহনমালিকেরাও তো লোকসান দিতে পারবেন না। এটা জটিল সমস্যা।
একই কথা জানালেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।তিনি বলেন, অতিরিক্ত ব্যয় বাড়ার পরে সাধারণ বাস মালিকেরা বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন। আমরা সব মতামত একত্র করে মিটিংয়ের মাধ্যমে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে বাস ভাড়া বাড়ালে যাত্রীদের উপরে চাপ বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, করোনা সংকটের পরে মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এরমধ্যে একবার ভাড়া বাড়ানোর পরে সবকিছুর দাম বেড়েছে। আরেক দফা ভাড়া বাড়লে মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :