ঢাকা: রাজধানীর গুলশান, বনানী, ভাসানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন নানা কারণে দেশবাসীর মনোযোগ কেড়েছে। গত ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ার পর আসনটি শূন্য হয়।
সোমবার (১৬ জুন) এই আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন দেশের মোট ৭৮টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে গতকাল শনিবার সকালে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ এবং মধ্যরাতে মোটরসাইকেল চালাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রোববার রাত ১২টার পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণভাবে ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার ও ইজি বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
তবে মহাসড়কগুলো এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকছে। এ ছাড়া নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এবং জরুরি সেবার কাজে ব্যবহৃত যানবাহনের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে।
নির্বাচন কমিশন এই উপনির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নিতে যাচ্ছে। তবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ভোটকক্ষগুলোতে সিসি ক্যামেরা থাকবে। এ আসনের মোট ভোটার তিন লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন আটজন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম) এবং মো. তারিকুল ইসলাম।
প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় বেশি তৎপর ছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের সিকদার আনিসুর রহমান এবং একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম।
এ নির্বাচনে রাজপথের প্রধান বিরোধী বিএনপি অংশ নেয়নি। এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও প্রার্থী দেয়নি।
গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণার সময়সীমা নির্ধারিত থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা কেউ প্রচারণায় নামেননি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর রামপুরায় সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভোটের আগের রাতে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার না পাঠাতে নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করেছেন বলে জানান। এ ছাড়া তিনি ভোটের দিন নিকেতন, সাততলা বস্তি এবং কালাচাঁদপুর এলাকায় গণ্ডগোল হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
যে ৭৮টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন :
সোমবার যে ৭৮টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার মধ্যে সাধারণ নির্বাচন বা সব পদে নির্বাচন হবে ৩৯টিতে। এর মধ্যে সাতটি পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন হবে। এ সাত পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএমে। পৌরসভাগুলো হচ্ছে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া, চাঁদপুরের ছেংগারচর, কুমিল্লার দেবীদ্বার, যশোরের বেনাপোল, চট্টগ্রামের দোহাজারী, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর, জামালপুরের জামালপুর ও নীলফামারীর ডোমার পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন হবে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হবে রাজশাহীর বাঘা ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায়। এ ছাড়া ৬৬টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে। এর মধ্যে ২৯টিতে সাধারণ ও ৩৭টিতে উপনির্বাচন হবে।
সোনালীনিউজ/এআর
আপনার মতামত লিখুন :