ঢাকা: ব্রিকসে সদস্য না হওয়ায় আশাহতের তেমন কিছু নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেছেন, আমাদের আরও সময় আছে। পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশ ব্রিকসে যুক্ত হতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রসচিব।
রোববার (২৭ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে ব্রিকসে বাংলাদেশের যুক্ত হতে না পারা নিয়ে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রসচিব।
এবার ব্রিকসে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরা আশাবাদী ছিলেন। ব্রিকসে ইথিওপিয়ার মতো একটি দেশের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে সরকারে মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্রসচিবের কাছে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে রাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক অনেক ইস্যু আছে। এখানে ভারসাম্য করার একটা ব্যাপার আছে। লাতিন আমেরিকা থেকে একজন, নর্থ আফ্রিকা থেকে একজন আবার মধ্যপ্রাচ্য থিকে নিয়েছে। সুতরাং তারাও জিওগ্রাফিক্যাল একটা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের পাশে আরও দেশ ছিল। যারা আগ্রহী ছিল। তারা পায়নি। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক পর্যায়ে বলতে পারেন, আমরা ছয়জনের মধ্যে এবার ছিলাম না। কিন্তু আমরা ব্রিকসের রিয়েল যে আউটরিচটা (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) আছে, ওটার মাধ্যমে আমাদের লাভবান হওয়ার সুযোগটা আছে। সেটাতে আমরা আছি।
পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশ ব্রিকসে যুক্ত হতে পারার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রসচিব।
তিনি বলেন, এবার ব্রিকস সম্মেলনে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে বলেছেন, এটা প্রথম ধাপ। পরবর্তীতে আরও ধাপ আসবে। আমরা আশা করছি যে, পরবর্তী ধাপে…। ইতোমধ্যে আমরা একটু সময় পেলাম।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সবাই যেভাবে বলছিল, ব্রিকস জি-৭ বা পশ্চিমা অর্থনীতির বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হবে, ব্যাপারটা কিন্তু এতটা সহজ না। এবার কিন্তু আমরা সে ধরনের কিছু দেখিনি। ব্রিকসেরতো ১৫ বছর হয়ে গেল। সুতরাং টেনজিবল আউমকামের দিকে যদি আপনারা দেখনে, একমাত্র এনডিবি ছাড়া তেমন একটা চোখে পড়েনি। সুতরাং আমরা এনডিবির পার্ট আছি, এখানে আশাহতের তেমন কিছু দেখছি না। সুতরাং আমাদের আরও সময় আছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন।
তিনি বলেন, এনডিবির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। উনি বাংলাদেশে আসার কথা বলেছেন। আগামী মার্চ মাস হয়তো আসবেন। আমাদের সঙ্গে অনেক প্রজেক্ট তিনি করবেন।
ব্রিকসে বাংলাদেশের আবেদনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন পররাষ্ট্রসচিব।
তিনি জানান, জেনেভায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের যখন দেখা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, আমাদের ব্রিকস সম্মেলনে দাওয়াত দেবেন; ব্রিকস প্লাসে যোগদানের জন্য। পরবর্তীকালে আমরা সেই দাওয়াতও পেয়েছি এবং প্রধানমন্ত্রী উত্তরে বলেছেন, আমরা যাব সেখানে। আমরা ব্রিকসের ফরমেটে যাব।
দক্ষিণ আফ্রিকায় তিন দিনব্যাপী ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন গত ২৪ আগস্ট ছয়টি দেশকে জোটটির পূর্ণ সদস্য হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জানান, নতুন দেশগুলোর সদস্যপদ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :