ডিএমপি কমিশনার

বিএনপি অফিসে তালা পুলিশ দেয়নি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ১১:৫৬ এএম
বিএনপি অফিসে তালা পুলিশ দেয়নি

ফাইল ছবি

ঢাকা : নয়া পল্টনে ২৮ অক্টোবরের সংঘাতের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি অফিসের সামনে সতর্ক অবস্থান নিয়ে থাকলেও পুলিশ সেখানে তালা দেয়নি বলে জানালেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।

বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের মধ্যে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধদের দেখতে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

কমিশনার বলেন, বিএনপির পার্টি অফিসে তালা পুলিশ দেয়নি। আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে পুলিশ সারা বছরই বিএনপি অফিসের বাইরে থাকে। পার্টি অফিসে নেতাকর্মীরা ঢুকতে চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই।

গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের মধ্যে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর পুলিশ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। তখন থেকেই কার্যালয়ের কলাসিবল গেইট তালা ঝুলছে। নেতা-কর্মীরা কেউ কার্যালয় আসছেন না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন, বাকিরা আছেন আত্মগোপনে। অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রতিদিন বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিঙে দলের পক্ষে বিবৃতি এবং কর্মসূচি ঘোষণা করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঝটিকা মিছিল ছাড়া তাকেও বাইরে দেখা যাচ্ছে না।

২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে ১৩ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দাবি করেছেন রিজভী।

এদিকে সেদিনের সংঘাতের পর থেকৈ এক দিন হরতাল এবং চার দফায় নয় দিন সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। তাদের দীর্ঘ দিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী এবং সমমনা দলগুলোও একটি কর্মসূচিতে রয়েছে। মাঝে মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে বুধবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে পঞ্চম দফায় তাদের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।

এই অবরোধের মধ্যে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে নাশকতার ঘটনা ঘটছে। ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে ২৮ অক্টোবর থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৩৮টির মতো যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।

এসব ঘটনায় দগ্ধ অন্তত ছয়জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের দেখতেই মঙ্গলবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান পুলিশ কমিশনার।

তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর সহিংসতার পর যানবাহনে আগুন দেওয়ার সময় হাতেনাতে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণ আরও এগিয়ে এলে এই নাশকতা ঠেকানো সম্ভব।

হরতাল-অবরোধের মধ্যে নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দিলে কিংবা তাদের তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে পুলিশ সদর দপ্তর।

আহত ছয়জনকে পুলিশের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলেও পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন।

ওই ছয়জন হলেন- রিকশাচালক আব্দুল জব্বার, পোশাক শ্রমিক মাহমুদুল হাসান, পরিবহন শ্রমিক সবুজ মিয়া, মেকানিক বিপ্রজীত ভাওয়ালী, পরিবহনকর্মী শাখাওয়াত হোসেন ও বাসের হেলপার রবিউল ইসলাম রবি।

তাদের মধ্যে জব্বারের শরীরের ২০ শতাংশ, মাহমুদুলের ১১ শতাংশ, সবুজের ২৮ শতাংশ, বিপ্রজীতের ৭ শতাংশ, শাখাওয়াতের ১০ শতাংশ ও রবির ১৭ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, পেট্রোলে দগ্ধ হওয়ায় তাদের শরীরে ক্ষতগুলো গভীর। তারা শঙ্কামুক্ত হলেও অনেকেরই অপারেশন প্রয়োজন হচ্ছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পর সহিংসতা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নে হাবিবুর রহমান বলেন, তেমন কিছু ঘটলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ‘সক্ষমতা’ পুলিশের রয়েছে।

খিলক্ষেতে এক এএসআইকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভিন্ন ঘটনা, এর সঙ্গে চলমান ঘটনার মিল নেই। একটি মামলাও হয়েছে।

এমটিআই

Link copied!