ঢাকা : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপের কারণে ২০২২ সালে দেশটিতে অল্প কিছু সন্ত্রাসী সহিংসতা দেখা গেছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান ও এর ফলে দৃশ্যমান সাফল্য তুলে ধরে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
মার্কিন সরকারের প্রকাশিত নতুন এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তারা প্রায়ই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশটির জিরো টলারেন্স নীতির ওপর জোর দেন এবং আল-কায়েদা ও আইএসআইএসের মতো বিশ্বব্যাপী সংগঠিত জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতি নাকচ করেন।
'কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম ২০২২' এর বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের জঙ্গিবিরোধী পদক্ষেপের কারণে ২০২২ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সহিংসতার অল্প কিছু ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষত আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী জামাত-উল-মুজাহিদীন (জেএমবি) এবং আইএসআইএস সংশ্লিষ্ট জেএমবি শাখা, নব্য জেএমবি’র মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে ২০২২ সালে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদ চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ জানায় অক্টোবরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানকালে আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত একটি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে (জেএএইচএস) নির্মূল করতে সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অভিযান পরিচালনা করে।
কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, জঙ্গি গোষ্ঠীটি জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে সহযোগিতা করেছিল। কর্তৃপক্ষ বছরের বাকি সময়জুড়ে কয়েক ডজন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথাও ঘোষণা করে।
মার্কিন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও। এতে বলা হয়, ২০১৫ সালে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনে হামলার ঘটনায় প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে গত ২০ নভেম্বর ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা।
কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষিত আল-কায়েদা অনুমোদিত আনসার আল-ইসলামের ২০ জন সন্দেহভাজন সদস্যকে পালানোর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিরা ২০২২ সালের শেষে পর্যন্ত পলাতক ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কারাগার ব্যবস্থায় মৌলবাদ থেকে সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী নিয়োগ গুরুতর উদ্বেগ হিসেবেই রয়ে গেছে। এটা রুখতে সিটিটিসিইউ (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সালে বাংলাদেশের কয়েকটি নির্বাচিত কারাগারে বাস্তবায়নের জন্য সমন্বিত একটি ‘ডের্যাডিকালাইজেশন’ বা জঙ্গি মনোভাব দূরীকরণ কর্মসূচি তৈরি শুরু করে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপগুলোও উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমায় প্রহরার সক্ষমতা রয়েছে।
এছাড়া কার্গো, যাত্রীদের স্ক্রিনিং ব্যবস্থা হালনাগাদ করেছে, সরঞ্জাম ও কর্মী সংখ্যাও বেড়েছে। বাংলাদেশ সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :