ঢাকা: দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এতে দেখা গেছে, দেশের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন খাদ্য গ্রহণে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় বেশি ভুগছেন রংপুর বিভাগের মানুষ। আর কম খুলনা বিভাগের মানুষ।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ-২০২৩’ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন-পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন, খাদ্য পরিকল্পনা এবং পর্যবেক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলমসহ সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ২১ দশমিক ৯১ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এলাকাভিত্তিক হিসেবে রংপুর বিভাগের ২৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তবে ঢাকা বিভাগে এ হার মাত্র ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। এছাড়া বরিশালে ২২ দশমিক ৮৩, চট্টগ্রামে ১৯ দশমিক ৬৬, ময়মনসিংহে ২৬, রাজশাহীতে ২৫ দশমিক ১ ও সিলেটে ২৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গড় তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। এছাড়া বরিশালে শূন্য দশমিক ৬৭, চট্টগ্রামে ১ দশমিক ১৬, ঢাকায় শূন্য দশমিক ৬৪, খুলনায় ১ দশমিক ৯, ময়মনসিংহে শূন্য দশমিক ৫৩, রাজশাহীতে শূন্য দশমিক ৫১ ও সিলেটে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন প্রতি ১০০ জনের মধ্যে একজন। সিলেট বিভাগের মানুষের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সবচেয়ে বেশি, আর সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে।
বিবিএস জানায়, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়লেও দেশের মানুষের ক্যালরি গ্রহণের হার বেড়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অপুষ্টিতে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।
নগর, মহানগর ও গ্রামের ২৯ হাজার ৭৬০ খানা থেকে আটটি প্রশ্নের মাধ্যমে এই জরিপ চালায় বিবিএস। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট উপাত্ত আমলে নেওয়া হয়।
পরিসংখ্যানে দেখানো হয়, গ্রামে বসবাসরত জনসংখ্যার ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শহরে যে হার ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
জরিপ অনুযায়ী, দেশের মানুষ এখন প্রতিদিন গড়ে ৩২৮ গ্রাম ভাত গ্রহণ করেন। ২০১৬ সালে যার পরিমাণ ছিল ৩৬৭ গ্রাম। ওই সময় দৈনিক ১৩ দশমিক ৬ গ্রাম ডিম গ্রহণ করতেন মানুষ। এখন তা কমে ১২ দশমিক ৭ গ্রামে নেমে এসেছে। একই সময়ে পেঁয়াজ গ্রহণের পরিমাণও কমেছে।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :