ঢাকা : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব সার্ভার থেকে দেওয়া 'জন্ম সনদ' ব্যবহার করে নাগরিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারের কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে ডিএসসিসির সার্ভার যুক্ত না করে জন্ম সনদ দেওয়ায় এই জটিলতা হচ্ছে জানিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) স্বপ্রণোদিত হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ আদেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
ওই চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেছেন, জন্ম সনদ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে তারা কাজ শুরু করেছেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান ডিএসসিসির জন্ম সনদ সেবাদাতা সংস্থাগুলো নিচ্ছে না এমন একটি খবর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে।
ওই সংবাদের বরাত দিয়ে কমিশন বলছে, নিজস্ব সার্ভার তৈরি করে গত বছরের ৪ অক্টোবর থেকে নগরবাসীকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ দেওয়া শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
কিন্তু সরকারের কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে ডিএসসিসির সার্ভার যুক্ত না করায় কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান ডিএসসিসির দেওয়া সনদ গ্রহণ করছে না। এতে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রার জেনারেলের সাইটে (https://bdris.gov.bd) সারাদেশের মানুষ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করে আসছে। ওই সার্ভারের সঙ্গে দেশে-বিদেশে ১৬টি বড় প্রতিষ্ঠান যুক্ত।
কিন্তু ডিএসসিসি হঠাৎ করে নতুন সার্ভার (https://bdris.dscc.gov.bd) দিয়ে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করে। এ পর্যন্ত তারা সার্ভারটি শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরেছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত করতে পারেনি। ফলে তাদের ইস্যু করা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে যে ১৯ ধরনের সেবা পাওয়ার কথা তার ১৮টিই নগরবাসী পাচ্ছেন না।
কমিশন বলছে, নাগরিক সেবা প্রাপ্তিতে জন্ম সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। সরকারের জন্ম ও মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে ডিএসসিসির সার্ভারটি যুক্ত না করেই জন্ম সনদ প্রদান করে হয়রানির বিষয়টি অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। সার্ভার সংযুক্তের জটিলতায় ডিএসসিসির নাগরিকগণ রাষ্ট্রীয় ১৯টি সেবার মধ্যে ১৮টি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কমিশন মনে করে, রাষ্ট্রীয় সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানি বন্ধে শিগগিরই ডিএসসিসির সার্ভার সংযুক্তের জটিলতা নিরসন করা জরুরি কাজ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এ অবস্থায় অভিযোগের বিষয়ে নাগরিকের হয়রানি বন্ধ দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে বলা হল।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, এরইমধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সঙ্গেও বিষয়টি সমন্বয়ের কাজ চলছে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তারা তিনটি বৈঠক করেছেন। আশা করছি আমার এ মাসের মধ্যেই সুরাহা হয়ে যাবে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :