ঢাকা: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত ১ লাখ টাকা ও ভাইস চেয়ারম্যানের ৭৫ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই সঙ্গে সমর্থনকারীদের স্বাক্ষরের বিধানেও সংশোধন আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ২৫০ জন ভোটারের স্বাক্ষর প্রয়োজন হতো, তা আর লাগবে না। তবে উপজেলা ভোটে চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা এবং ভাইস চেয়ারম্যানের ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।’
নির্বাচনের পোস্টারেও পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘পোস্টারেরও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সাদা কালো পোস্টারের পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ব্যবহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দের আগে সীমিত পরিসরে প্রচারণা করা যাবে। কাস্টিং ভোটের ১৫ ভাগ না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘কমিশন সভায় অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। সেগুলো ভেটিং শেষে বিধিমালা সংশোধন হবে।’
যেসব প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে
১. পোস্টার, ব্যানার সাদা-কালো অথবা রঙিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
২. প্রতীক বরাদ্দের আগে জনসংযোগ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণার প্রস্তাব করা হয়।
৩. পাঁচ জনের বেশি কর্মী বা সমর্থককে নিয়ে জনসংযোগ করা যাবে না।
৪. প্রতি ইউনিয়নে একটি এবং পৌরসভার প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে একটির বেশি নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করা যাবে না।
৫. নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিসের আয়তন ৬০০ বর্গফুটের বেশি হতে পারবে না।
৬. নির্বাচনী প্রচারণায় একটির বেশি শব্দযন্ত্র (হর্ন) বা জনসভায় চারটির বেশি শব্দযন্ত্র (হর্ন) ব্যবহার করা যাবে না।
৭. শব্দদূষণ প্রতিরোধে শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মান মাত্রা ৬০ ডেসিবলের বেশি হতে পারবে না।
৮. প্রচারণায় পোস্টার বা ব্যানারে পলিথিনের ব্যবহার না করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
৯. স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ভোটারের সমর্থনেরযুক্ত তালিকা দাখিলের বিধান বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
১০. অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
১১. চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে জামানত এক লাখ টাকা, ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার টাকা এবং নারী সদস্যের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২. সমভোটের ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়।
১৩. প্রদত্ত ভোটের শতকরা ১৫ ভাগ অপেক্ষা কম ভোট পেলে জামানত বাজেয়াপ্তের প্রস্তাব করা হয়েছে।
১৪. চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকা এবং নারী সদস্যদের এক লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
১৫. মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়।
১৬. নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটগ্রহণে কমিশনের ক্ষমতার বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।
১৭. মনিটরিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
১৮. নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হওয়ায় প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালার সংশোধনীতে ২৬টি এবং ২০১৬ সালে উপজেলা প্রদত্ত পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালার সংশোধনীতে ৮টি বিধান সুপারিশের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইসির আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ প্রস্তুত করা হয়।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :