ঢাকা: তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে গোটা দেশ।অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন।চলতি মৌসুমের দেশের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাজধানী ঢাকায়ও ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এবছর ঢাকায় এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা আর হয়নি।
দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে তীব্র এই তাপদাহে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় এক বৃদ্ধ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে তার না পরিচয় জানা যায়নি।
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ফকিরাপুল ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে মতিঝিল থানা পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর সাংবাদিকদের জানান, রোগে আক্রান্তের পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমের কারণে মৃত্যু হতে পারে।
এছাড়া গাজীপুরের কোনাবাড়িতে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মানসিক ভারসম্যহীন এক যুবক।
অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন (৩৩) হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। একইসঙ্গে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় মর্জিনা খাতুন (৬০) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে ।আজ চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পাবনা শহরেও হিট স্ট্রোক করে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
পাবনায় নিহত ব্যক্তির নাম সুকুমার দাস (৬০)। জানা গেছে, শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোক করেন তিনি। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যতদূর সম্ভব তাপ এড়িয়ে চলতে হবে। বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। গায়ে পাতলা কাপড় পরতে হবে। ডায়াবেটিস ও প্রেসারের রোগীদের রোদে না যাওয়াই ভালো। এসব রোগী যদি বাহিরে বের হলে সমস্যা মনে করেন তাহলে দ্রুত ঠান্ডা জায়গায় যেতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে।
তীব্র গরমে খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন চরম ভোগান্তি ও ঝুঁকিতে। কর্মজীবীদের দুর্ভোগ বেড়েছে অন্য সবার চেয়ে বেশি। গরমে যেসব রোগ দেখা দেয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো- ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা, হিট স্ট্রোক ইত্যাদি। এ পরিস্থিতিতে একটু অসতর্কতায় ঘটতে পারে বিপদ।
তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুরা। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :