ঢাকা: জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ২৩ নাবিকসহ এমভি আব্দুল্লাহ পৌঁছেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে নাবিকদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের সিটি মেয়র, কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নাবিকদের স্বজনরা।
বন্দরে পৌঁছে জাহাজের ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, সোমালিয়ার দস্যুদের কবল থেকে আমরা ২৩ নাবিকই পৌঁছাতে পেরেছি। সরকার কৌশলগতভাবে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমি বলেছিলাম- বিদেশি নৌ-বাহিনী যেন ভায়োলেন্স না করে, যাতে আমাদের নাবিকদের কারো প্রাণ না যায় বা জাহাজের কোনো ক্ষতি যেন না হয়। আমরা সবাই সুস্থ ও অক্ষতভাবে ফিরতে পেরেছি, পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছি। এ এমন অনুভূতি যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাপ্টেন বলেন, প্রথম দিন যখন আমরা দস্যু দ্বারা আক্রান্ত হলাম, তখন সেকেন্ড অফিসার ব্রিজে ছিলেন। আমি নিচে নেমে অ্যালার্ট দিচ্ছিলাম। সবকিছু অতি দ্রুত ঘটছে। দস্যুরা স্পিডবোটে এসে জাহাজে উঠে ব্রিজে চলে আসে। আমি আর সেকেন্ড অফিসার আমাদের হিডেন রুমে যেতে পারিনি। সেকেন্ড অফিসার আটক হওয়ার পর আমি গিয়ে দেখি একে-৪৭ তাক করে আছে তার দিকে। আমি যেতেই আমার দিকেও একে-৪৭ তাক করে। আমি স্ট্রং ছিলাম।
তিনি বলেন, আমি হাত তুলে সারেন্ডার করে বললাম, আমরা বাংলাদেশি, আমরা মুসলিম। আমরা রোজা আছি। দস্যুরা সবাইকে ডাকতে বলে। সবাই চলে আসে সেখানে। এরপর আমরা সবাই সেখানেই ব্রিজের মধ্যে সারাদিন সারারাত ছিলাম।
ক্যাপ্টেন বলেন, মৃত্যুর হুমকি ছিল। নাবিকদের কেউ কেউ কান্নাকাটি করছিল। আমার মনে ভয় ছিল, কিন্তু বডি ল্যাঙ্গুয়েজ স্বাভাবিক রেখেছি। সবাইকে হ্যান্ডেল করে, যেন আমাদের কোনো ক্রুর কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রাখি। সেফটি অফ লাইফটাকে প্রাধান্য দিয়েছি।
মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল-১ (এনসিটি) নম্বর এসে পৌঁছালে নাবিকদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। স্বজনদের পাশাপাশি কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এখানে উপস্থিত ছিলেন।
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর নাবিকদের কাছে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন স্বজনেরা। জেটিতে তাদের কারো হাতে ছিল ফুল, কারও হাতে কেক।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :