ঢাকা : ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনা তদন্ত করতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল কলকাতা গেছে। সেখানে পৌঁছে দলটির নেতৃত্বে থাকা ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আশা করি, পুরো লাশটা না পেলেও তার অংশ বিশেষ আমরা উদ্ধার করতে পারব। মনে রাখতে হবে, ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অনুযায়ী, লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার না করা গেলে মামলাটা নিষ্পত্তি করা যাবে না।’
রোববার (২৬ মে) কলকাতায় পৌঁছে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি এ কথা বলেন। ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমাদের মূল কাজ হলো দুটি। এক, পুরো লাশ অথবা লাশের অংশ বিশেষ উদ্ধার করা। দুই, আরেকটি কাজ হলো আসামিদের শনাক্ত করা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা। তাদের সঙ্গে অন্য কোনো চক্র জড়িত কিনা, এগুলো খুঁজে বের করা।’
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, হত্যাকারীরা, মদদদাতারা, যারা বেনিফিশিয়ারি, যারা প্লানার এবং যারা এক্সজিকিউশনের দায়িত্ব নিয়েছিল, তাদের প্লানটা ছিল এমন; তারা একদিকে হত্যা করবে, লাশ গুম করবে, এবং লাশটাকে যেন কোনোদিন না পাওয়া যায়, সেই চিহ্ন তারা রাখবে না। অন্যদিকে, অপরাধীদের যেন ধরতে না পারে; একে একে দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়া। এ কারণে, অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে কলকাতা পুলিশ যেমন কাজ করছে, বাংলাদেশ পুলিশও কাজ করছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘ক্রিমিনাল ইস্যু অনুসারে, যেহেতু হত্যার শুরুটা বাংলাদেশে, শেষটা কলকাতা। উনারাও কাজ করছেন, আমরাও কাজ করছি। আশা করি, অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে উনারা যেভাবে কাজ করছেন; আমরাও কোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারি কিনা। সেজন্য, আমরা এসেছি। আমরা মনে করি এটা দ্রুত করা সম্ভব।’
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে কলকাতা গেছেন তিন সদস্যের একটি দল।
রোববার (২৬ মে) সকাল ১০ ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয় প্রতিনিধিদলটি। বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় তারা কলকাতায় পৌঁছান বলে জানা গেছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, ওয়ারী বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহীদুর রহমান।
বিমানবন্দরে ডিবিপ্রধান বলেন, শাহীন এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড বলে নিশ্চিত হয়েছে কলকাতা ও ঢাকার গোয়েন্দারা। বাংলাদেশের তদন্ত দল কলকাতায় প্রথমে ঘটনাস্থলে যাবে। এরপর ভারতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার ভারতীয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু পশ্চিমবঙ্গের উত্তর২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার অন্তর্গত ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেনের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। পরদিন ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসক দেখানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। এরপর গত ২২ মে কলকাতার নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে তার খুন হওয়ার বিষয়টি জানায় ভারতীয় পুলিশ।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :