ঢাকা: ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং তার মরদেহের সন্ধানে কলকাতায় রয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম। এই টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিএমপির ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সফরের দ্বিতীয় দিনে সোমবার (২৭ মে) ডিবি টিম ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনেও আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মরদেহের খণ্ডিতাংশ হলেও উদ্ধারের জোর তৎপরতা চালিয়েছেন পুলিশের কর্তা ব্যক্তিরা। তাদের সহযোগিতা করছে কলকাতা পুলিশ।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কলকাতায় গ্রেফতার হয়েছেন বাংলাদেশের জিহাদ হাওলাদার, যিনি কসাই জিহাদ হিসেবে পরিচিত। কলকাতা পুলিশের দাবি, তিনিই এমপি আনারের মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করেন। তাকে নিয়ে সোমবার যে ফ্ল্যাটে এমপি আনার খুন হয়েছেন সেখানে ‘টিআই প্যারেড’ বা মহড়া পরিচালনা করেছে ডিবি টিম।
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, সোমবার (২৭ মে) বেলা পৌনে ১১টার দিকে গাড়ি বহর নিয়ে কলকাতার নিউ টাউনের সাঞ্জিভা গার্ডেন্সে প্রবেশ করেন ডিবির হারুন। এ সময় কলকাতার পুলিশ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। আবাসনের বি-ইউ ভবনের বেজমেন্ট দিয়ে আনার হত্যায় জড়িত জিহাদকে নিয়ে আসে সিআইডি। এরপর এমপি আনারকে যে ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয় সেখানে একটি চেয়ারে বসিয়ে জিহাদকে জেরা করেন ডিবি হারুন।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে যেখানে এমপি আনারের দেহাংশ ফেলা হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত জিহাদ, সেখানেও গিয়েছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দাপ্রধান। এরপর জিহাদকেও প্রায় চার ঘণ্টা জেরা করেন তিনি।
হারুন জানিয়েছেন, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে এমপি আনারকে। হারুন অর রশীদ আরও জানিয়েছেন, এই তদন্তে কলকাতার সিআইডি যথেষ্ট সাহায্য করছে। পুলিশ যেভাবে সাহায্য করছে, তাতে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিন কলকাতার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হারুন বলেন, আমরা দুবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্ত জিহাদকে টিআই প্যারেডের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে গেছি। জিহাদকে নিয়ে আজ আবার বাগজোলা খালে যেখানে লাশ ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেখানে এসেছি। আমাদের আশা স্বল্প সময়ের মধ্যে লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করতে পারব।
বাগজোলা খাল থেকে নিউ টাউনের বেশ কয়েকটি সন্দেহভাজন জায়গায়ও ঘুরে দেখে বাংলাদেশ ডিবি টিম।
এমপি আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তিন সদস্যের একটি দল রোববার (২৬ মে) সকালে কলকাতায় যায়। ওই টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। টিমে আরও রয়েছেন ওয়ারী বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহীদুর রহমান।
গত ১৩ মে কলকাতায় গিয়ে নিখোঁজ হন এমপি আনার। পরে তার বন্ধু কলকাতায় একটি জিডি করেন। সেই জিডির সূত্রে তিনি নিখোঁজ ধরে তদন্ত চলে। পরে জানা যায়, এমপি আনার হত্যার শিকার হয়েছেন। এ হত্যায় তারই বাল্যবন্ধু শাহীন পরিকল্পনাকারী। তাকে এ হত্যায় আরও সহযোগিতা করে কয়েকজন কিলার। এ ঘটনায় কলকাতায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। বাংলাদেশে এমপি আনারের মেয়েও শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন। ঢাকায় তিনজন এবং কলকাতা থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :