ঢাকা: রাজধানীতে দায়িত্ব পালনকালে সহকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা কনস্টেবল কাউসার যে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন সেটি পুলিশ বিভাগ জানত। এমন তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, চিকিৎসার পর একজন চিকিৎসক কাউসারের রোগমুক্তির সনদ দিলে তাকে দায়িত্বে ফেরানো হয়।
মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে হাইওয়ে পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান পুলিশ প্রধান।
তিনি বলেন, তার (কাউসারের) অসুস্থতার বিষয়টি আমরা জানতাম। একজন ডাক্তার তাকে সার্টিফিকেট দিলে তাকে ডিউটিতে নেওয়া হয়। এখন এ বিষয়গুলোতে আমাদের আরও সতর্কতার প্রয়োজন কিনা, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের উত্তর পাশের গার্ডরুমের সামনে দায়িত্ব পালনের সময় কাউসার এসএমজি দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে হত্যা করেন। তার গুলিতে জাপান দূতাবাসের গাড়ি চালক সাজ্জাদ হোসেন শাহরুখও আহত হন।
ওই ঘটনায় নিহত মনিরুলের ভাই কনস্টেবল মাহাবুবুল হক গুলশান থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
ঠিক কী কারণে কাউসার তার সহকর্মীর ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালান, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, মনিরুলের শরীরে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। মাথার বাঁ পাশে একাধিক গুলির চিহ্ন ছিল। বাঁ চোখ, বাম হাতের বাহু, ডান হাতের কনুই, গলার নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত- বুকে, পেটে, পিঠে বিভিন্ন স্থানে গুলির ক্ষত রয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, কাউসার ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। ২০১০ সালের দিকে তার মধ্যে মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়। তিনি কারো সঙ্গে কথা বলতেন না এবং অল্পেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন।
তবে কাউসার মাদকাসক্ত ‘ছিলেন না’ এবং পারিবারিকভাবে তেমন কোনো ‘সমস্যাও ছিল না’ বলে তার স্বজনদের ভাষ্য।
কাউসারের স্ত্রী সাথী বলেন, গত ৪-৫ দিন ধরে আমাদের সঙ্গে কম কথা বলছিল। মাঝে মধ্যে যখনই মানসিক রোগে আক্রান্ত হত, এরকম করত। কয়েকবার পাবনায় এক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাও করানো হয়েছে। চিকিৎসার কাগজপত্র আমার স্বামীর কাছে আছে।
কাউসার মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে থাকলে তিনি কীভাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন জানতে চাইলে গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ওই কনস্টেবলের মানসিকভাবে অসুস্থতার কোনো তথ্য তাদের কাছে ‘নেই’।
তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে এ বিষয়ে অবগত, আইজিপি মঙ্গলবার তা স্বীকার করে নিলেন।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :