একনজরে হাবিবুল আউয়াল কমিশন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ০৩:৫১ পিএম
একনজরে হাবিবুল আউয়াল কমিশন

ঢাকা : হাবিবুল আউয়াল কমিশন হলো বাংলাদেশের ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন। ২০২২ সালের অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি এই কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ এই কমিশনের সদস্য ৫ জন। এই কমিশনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এই কমিশনের মেয়াদ ৫ বছর।

তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পরদিনই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকে ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। আজ হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসি পদত্যাগের ঘোষণা দিল।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এই কমিশনের সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। কমিশনের সদস্যরা হলেন— কাজী হাবিবুল আউয়াল, তিনি এই কমিশনের প্রধান। ইতিপূর্বে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ছিলেন। মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সিনিয়র সচিব। আনিছুর রহমান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব। বেগম রাশিদা সুলতানা, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ, রংপুর। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বিটিআরসির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

হাবিবুল আউয়াল কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর সংলাপ আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সাথে ১ম সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে আমন্ত্রিত ৩০ শিক্ষাবিদের ১৭ জনই অংশ নেননি। ২২ মার্চ বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আমন্ত্রিত ৩৭ জনের মধ্যে ১৯ জন অংশগ্রহন করেন। ৫ এপ্রিল প্রথম কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৫ মে বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। ২৩ আগস্ট সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১১ সেপ্টেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুত করে।

হাবিবুল আউয়াল কমিশনের যত নির্বাচন : ২০২২ সালের পাঁচই ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। ওই কমিটির সুপারিশে ওই বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন ইসি।

এ সময় দায়িত্ব নেওয়ার পরই ওই বছরের ১২ অক্টোবর গাইবান্ধার একটি আসেন উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির পর ওই নির্বাচন বাতিল করে কমিশন। এরপর কয়েকটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিরোধী রাজনৈতিক জোট বিএনপিসহ অন্যান্য দল। তবুও সে সব নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি অনিয়মের পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন।

সবশেষ গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনে অনেকগুলো দল আবেদন করে। শর্ত পূরণ করার পরও চারটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে।

গত সাতই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও দিন দেশে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়ার তথ্য জানানোর পর এই কমিশন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা তৈরি হয়।

গত পাঁচই আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর গত এক মাসে তিনটি রাজনৈতিক দল- আমার বাংলাদেশ পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ ও নাগরিক ঐক্যকে নিবন্ধন দেয় কমিশন।

এমটিআই

Link copied!