ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হচ্ছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হচ্ছে

ঢাকা: রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সকল অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চলমান অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

ঢাকা শহরের যানজট সহনীয় পর্যায়ে আনয়ন এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী লে. জেনারেল (অব:) আব্দুল হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি এবং পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ড. এস. এম সালেহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। 

সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শের ভিত্তিতে আশু করণীয় সুপারিশের আলোকে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। 

সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্র্যাফিক) জানান, মাঠ পর্যায়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে ৪,২০০ জন পুলিশ সদস্য এবং ৬০০ জন ছাত্র প্রতিনিধিকে নিয়োজিত করা হয়েছে। 

গত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক ৪৫,৪৫৭টি ব্যাটারি চালিত রিকশা, ৫,৯৭৯ পায়ে চালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের জন্য ৪৯,৯৮,৫৪,৩৬৫.০০ (উনপঞ্চাশ কোটি আটানব্বই লক্ষ চুয়ান্ন হাজার তিনশত পঁয়ষট্টি) টাকা জরিমানা আরোপসহ ১,৩৯,০০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার আলোকে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখের মধ্যে পাইলট আকারে ঢাকা শহরের ৪টি ইন্টারসেকশনে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্র্যাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। 

উক্ত পাইলটের ফলাফলের আলোকে আগামী চার মাসের মধ্যে আরও ১৮টি ইন্টারসেকশনে দেশীয় প্রযুক্তির ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। 

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ব্যাটারি চালিত রিকশার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করা হলে প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
 
এছাড়াও তিনি সড়কে যানবাহন চলাচল উন্নয়নের জন্য সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক চলমান প্রয়োজনীয় রোড মার্কিং, ট্র্যাফিক সাইন এবং বাস স্টপসমূহে যথাযথভাবে মার্কিং কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে বলেন। 

তিনি সড়কে যানজটের কারণ পর্যবেক্ষণ এবং সমাধানের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নেতৃত্বে কমপক্ষে ৬টি এবং ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে ২টি ট্রাফিক মনিটরিং টিম গঠনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও তিনি বাস স্টপেজে বাস থামার বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

জনসাধারণের ভোগান্তি কমানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সকল অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চলমান অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঢাকা শহরের প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয় বৈঠকে।

এছাড়া, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকা শহরে ট্র্যাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালুর জন্য সিটি কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এআর

Link copied!