ঢাকা: বিডিআর কল্যাণ পরিষদ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে ‘জাস্টিস ফর বিডিআর’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছয়টি দাবিতে সমাবেশ করছেন তারা। বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যরা মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরাও সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮ টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যে বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের সবাইকে চাকরিতে পুনর্বহাল এবং তাদের ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
এরইমধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ ও কার্যপরিধি ২-এর (ঙ) নম্বর ধারা বাদ দিতে হবে।
একইসঙ্গে স্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত সব প্রকার নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হওয়া ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী ‘বাংলাদেশ রাইফেলস-বিডিআর’ নাম ফিরিয়ে আনতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে এবং শহীদ পরিবারের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ঝিনাইদহ থেকে আসা সাবেক বিডিআর সদস্য বিএম কামরুজ্জামান বলেন, তৎকালীন আওয়ামী শাসক শেখ হাসিনা তার মসনদকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করার জন্য চৌকস এক বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করে বিজিবি গঠন করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং আমাদের যে ভাইয়েরা জেলখানায় কষ্টের জীবন-যাপন করছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মসূচি চলমান থাকবে।
সাবেক বিডিআর সদস্যের সন্তান আল-আমিন বলেন, বিনা অপরাধে আমার বাবাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পরও কিছুদিন আমার বাবা ডিউটি করেছিলেন। পরে ছুটিতে থাকাকালীন আমার বাবাকে কল করে ডেকে নিয়ে মিথ্যা সাজার সম্মুখীন করা হয়।
তিনি বলেন, সরকারকে বলব বিডিআরকে আইন শেখাবেন না। অবিলম্বে বিডিআরদের চাকরিতে পুনর্বহাল করুন। এর জন্য যদি ১০টা প্রাণও যায়, আমরা দেব, যদি ২০ টা প্রাণ লাগে, আমরা দিতে প্রস্তুত।
সাবেক বিডিআর সদস্যের মেয়ে আর্তনাদ করে বলেন, আমার বাবাকে মিথ্যা সাক্ষী না দেওয়ায় ফাঁসানো হয়েছে। তাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। আমার বাবা বেইমানি না করায় আজ তার গলায় ফাঁসির দড়ি। বেইমানি না করার ফল কি এরকম? আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন। আমি আমার বাবাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :