সরকারি চাকরিতে বিশাল বৈষম্য জাতির জন্য বড় লজ্জার

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২১, ১০:২৯ এএম
সরকারি চাকরিতে বিশাল বৈষম্য জাতির জন্য বড় লজ্জার

ফাইল ছবি

ঢাকা : বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বৈষম্য ও শোষনের বিরুদ্ধে, অথচ সরকারি চাকুরিতে বেতন ও পদোন্নতিতে ক্ষেত্রে বিশাল বৈষম্য বিদ্যমান।

অষ্টম পে-কমিশন গঠন করা হয়েছিল সকল সরকারি চাকুরিজীবীদের জীবনমান বিবেচনা করে পে-স্কেল দেওয়ার জন্য। উক্ত পে-কমিশন ২০১৪-১৫ সালের বাজারদর বিশ্লেষন করে ১৬টি গ্রেডের সর্বোচ্চ ৭৫,০০০ ও সর্বনিম্ন ১১,২০০ টাকা নির্ধারন করে পে-স্কেল সুপারিশ করে, কিন্তু সেই সুপারিশকৃত পে-স্কেল আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আলোর মূখ দেখেনি। চুড়ান্ত পে-স্কেল/২০১৫-তে সর্বোচ্চ ৭৮,০০০ ও সর্বনিম্ন ৮,২৫০ টাকা নির্ধারন করে ১৬টি গ্রেড পরিবর্তে ২০টি গ্রেডের বেতন কাঠামো কার্যকর করে। এমনকি এই ২০টি গ্রেডের উপরে আরও ২টি গ্রেড রয়েছে।

তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, এতো টাকা খরচ করে পে-কমিশন গঠন নামক নাটক হলো কেন?

পে-স্কেল/২০১৫-তে স্থায়ী পে-কমিশন গঠন করার কথা থাকলেও ৬ (ছয়) বছর পূর্ন হলেও এখনো পর্যন্ত গঠন হয়নি। ২০১৪-১৫ সালের চেয়ে বর্তমানের নিত্যপন্যের ও ভোগ্যপন্যের জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুন অথবা তিনগুন। 

বর্তমান বাজারদরে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীগন মানবেতর জীবনযাপন করছে, অথচ সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহন করছে না। 

পে-স্কেল/২০১৫-তে উপরের গ্রেডের কর্মকর্তাদের বেতন যেমন বাড়িয়ে নিয়েছিলেন, তেমনি গত ছয় বছরে বিভিন্ন আর্থিক সুবিধাও বাড়িয়ে নিয়েছেন।

বাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা খরচ, সন্তানদের শিক্ষা খরচ, নাস্তা সবকিছুই খরচ দ্বিগুন-তিনগুন হয়েছে।

বেতনের মতো পদোন্নতির ব্যবস্থায় বিশাল বৈষম্য বিরাজমান। ১১ থেকে ২০ গ্রেডের মোট পদের শতকরা ৭০ ভাগ পদই ব্লক পোস্ট, আবার কিছু পদের পদোন্নতি থাকলেও পদোন্নতিযোগ্য পদ খুবই সীমিত। কোন কোন পদের কর্মচারীদের চাকুরির শেষ সময়ে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে একটি পদোন্নতি দিয়ে অবসরে পাঠানো হয়। মেধা ও যোগ্যতা থাকার পরও পদোন্নতিহীন চাকুরি জীবন কাটে চরম হতাশায়।

অথচ উপরের গ্রেডের সকল পদের নির্দিষ্ট সময়ে পদোন্নতি হয়, পদ খালি না থাকলেও।

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে দুই নীতি চলছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমলাতান্ত্রিক সম্রাজ্য সৃষ্টি করেছে। বৈষম্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীগন আত্মহননের পথও অবলম্বন করছেন।

যদি সরকার অচিরেই বেতন ও পদোন্নতি বৈষম্য নিরসনের উদ্যোগ গ্রহন না করেন, তাহলে সারাদেশের সকল ১১-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারীতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় ফোরাম। দেয়ালে পিঠ ঠেঁকে গেছে, তাই সকল সংগঠন একতাবদ্ধ হয়ে সারাদেশের সকল সরকারি অফিসে কর্মবিরতি পালন করতেও পিছপা হবে না।

খান আতাউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় ফোরাম।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Link copied!