ঢাকা : কে হচ্ছেন জাতীয় সংসদের ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা ও কৃষ্ণপুর) আসনে নৌকার মাঝি? প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মানুষের মুখে ঘুরতে থাকা এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজ।
মঙ্গবার (৪ অক্টোবর) বিকাল চারটায় গণভবনে অনুষ্ঠেয় সংসদীয় বোর্ডের সভায় এ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ।
ফরিদপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ইতোমধ্যে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৭ জন। দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির এ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন প্রবীণের পাশাপাশি একাধিক তরুণ নেতাও।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা-কৃষ্ণপুর) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহের শেষদিন ছিল শনিবার।
এদিন পর্যন্ত ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্রের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া, বিপুল ঘোষ, সাব্বির হোসেন, আব্দুস সোবহান, আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু, মেজর (অব.) এটিএমএ হালিম, শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েল, মনিরুজ্জামান সরদার, কালাচাঁদ চক্রবর্তী, কাজী দেলোয়ার হোসেন, এবিএম শফিউল আলম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মো. ইউসুফ, মো. লায়েকুজ্জামান, সায়েম আমীর ফয়সল সামি ও বাহালুল মজনুন চুন্নু।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাহালুল মজনুন চুন্নুর পক্ষে দলের মনোনয়নের জন্য আবেদপত্র সংগ্রহ করা হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আবেদনপত্র জমা দেননি বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। সেই থেকে প্রয়াত এই প্রভাবশালী নেতার আসনে কে হবেন নৌকার মাঝি, তা নিয়ে সালথা ও নগরকান্দায় আলোচনা ও কৌতূহলের শেষ নেই। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীদের নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সাধারণ মানুষের পোস্টমোর্টেমও অব্যাহত আছে। চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন আড্ডা ও আলোচনায় এ আসনের ভোটারদের কাছে এটিই এখন আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে আজ অনুষ্ঠেয় দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ আসনের উপনির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। তবে মনোনয়ন দৌড়ে কে এগিয়ে আছেন তা বলা মুশকিল। কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আসলে কে মনোনয়নর পাবেন। তবে প্রয়াত নেত্রী সাজেদা চৌধুরীর পরিবারের বাইরে দলের কয়েকজন তরুণ নেতার নাম ভোটারদের মুখে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। এরা হলেন অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল ঘোষ এবং সাংবাদিক লায়েকুজ্জামান প্রমুখ।
জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর উত্তরসূরি হিসেবে তার বড় ছেলে আয়মন আকবর চৌধুরী বাবলু ও ছোট ছেলে শাহদাব আকবর চৗধুরী লাবু দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। প্রয়াত এ নেত্রীর পরিবারের একজন সদস্য আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘যে যাই কিছু বলুক না কেন শেষ পর্যন্ত তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
অবশ্য অপর কয়েকটি সূত্র বলছে, পরিবারের বাইরে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে সবার আগে অনেকটা এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। কেননা নগরকান্দা, সালথা ও কৃষ্ণপুরের অবহেলিত জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে তিনি অনেক আগে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। দলের জন্য তাদের পরিবারের ত্যাগও অনেক। বিশেষ করে করোনা মহামারির প্রকোপে যখন জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখন জামাল হোসেন মিয়া পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অসহায় মানুষের পাশে। নিজের অর্থে নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও গরিব অসহায় শিক্ষার্থীদের সহায়তাও করে আসছেন তিনি। নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :