ঢাকা : রূপালি জগতের পর্দায় আড়াই দশক কাটিয়ে দেওয়া চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ প্রথমবারের মতো আইনসভার প্রতিনিধি হয়ে জানিয়েছেন, তার পরিবার এখন আর মাত্র চার/পাঁচ জনের নয়; নির্বাচিত আসনের ২০ লাখ মানুষকে নিজের পরিবারের মানুষ বলে মনে করছেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ-কলকাতার এই ব্যস্ত নায়ক। কয়েক বছর ধরেই রাজনীতির মাঠে তার দেখা মিলছিল। এবারে সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই বিচরণকে স্থায়ী রূপ দিলেন ফেরদৌস।
এখন আমার পরিবার ২০ লাখ মানুষের: ফেরদৌস
কলকাতার আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফেরদৌস। তুলে ধরেছেন প্রাথমিক কিছু কাজের পরিকল্পনাও।
ভোটের রাতে (রোববার) চূড়ান্ত ফল প্রকাশের মুহূর্ত প্রসঙ্গে ফেরদৌস বলেন, মনে হচ্ছিল, যে জার্নিটা শুরু করেছিলাম, সেটা আজকে সফল হল। প্রচারকাল থেকে জয় পাওয়া, পুরো ব্যাপারটা কেমন অবিশ্বাস্য মনে হয়। আমি চেয়েছিলাম, পর্দার নায়ক থেকে জননায়ক হয়ে উঠতে। গলায় একের পর এক ফুলের মালা যখন পরিয়ে দেওয়া হল, তখন বুঝতে পারলাম, আমি একটা বড় দায়িত্বের মধ্যে প্রবেশ করলাম।
ফেরদৌস বলেন, আমার আসনের অধীনে মোট ১১৯টা কেন্দ্র। একটা করে কেন্দ্রের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে এবং ধানমণ্ডির অফিসের কেউ কেউ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছেন। আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। ওই সময়ের উপলব্ধি ঠিক ভাষায় বোঝাতে পারব না।
নায়ক জানালেন নির্বাচনি প্রচারে মানুষের একেবারে কাছে গিয়ে যে ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন তার স্বাদ আলাদা।
অদ্ভুত ব্যাপার, এতদিন অভিনেতা হিসেবে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। কিন্তু এবার তাদের কাছাকাছি গিয়ে যে ভালোবাসা পেলাম, সেটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। অনেক বেশি আবেগে পরিপূর্ণ। এতদিন আমার ৪-৫ জনের পরিবার ছিল। এখন থেকে আমার পরিবারের সদস্যসংখ্যা ২০ লাখ।
ফেরদৌসের নির্বাচনি আসনের ভোটার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা ‘আলাদা প্রাপ্তি’ বলে জানান ।
আমার কাছে একটা বিষয় খুবই গর্বের যে, তিনি আমার কেন্দ্রের ভোটার। ভোটের দিন সকাল আটটায় তিনি আমাকে প্রথম ভোট দিয়েছেন। এটা আমার কাছে অন্য রকমের একটা প্রাপ্তি।
ফেরদৌস জানালেন, গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত নির্বাচনি প্রচারে তিনি সব স্তরের মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
প্রচারে নেমে প্রতিদিন আমি ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার করে হেঁটেছি। চেষ্টা করেছি নিজেকে উজাড় করে দিতে।
শুরুতে কোন কাজটিকে অগ্রাধিকারে রেখেছেন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এলাকার অনেকেই বলেছেন জিতলে যেন তাদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করি। কথা দিয়েছিলাম, এখন তাদের সঙ্গে আগে দেখা করব। প্রচারে আমার কেন্দ্র পোস্টার আর ব্যানারে ভরে উঠেছিল। সেগুলো খুলে এলাকাটা পরিষ্কার করানোর ইচ্ছে রয়েছে।
ভোটের প্রচারে ফেরদৌসের পাশে থাকতে চেয়েছিলেন কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, এই অভিনেত্রীর কোনো শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন কী না জানতে চাইলে বলেন, দেশের বাইরে থেকে প্রথমটা আসে ঋতুর কাছ থেকে। ভোটের রাত সাড়ে ১২টার দিকে। ও প্রচণ্ড খুশি। বলল, আমাকে নিয়ে ও গর্বিত।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :