ঢাকা: প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় নামাজে জানাজা বাদ জোহর বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ৮ নম্বর সড়কে অবস্থিত বায়তুল আতিক জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তার মরদেহ ঢাকাতেই সংরক্ষণ করা হবে।
আগামীকাল রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় নামাজে জানাজা এবং বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজ্জা চৌধুরী শুক্রবার মধ্যরাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ২ মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
গত ২ অক্টোবর সকালে ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন তার মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানান যে, তার বাবা আগে থেকেই স্কিমিক হার্ট ডিজিজেস ভুগছিলেন।
২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বি. চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে (প্রখ্যাত ‘মুন্সেফ বাড়ি) নানাবাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। সব পরীক্ষাতেই তিনি মেধা তালিকায় ছিলেন।
এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ লন্ডন, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত ফেলো-এফ.আর.সি.পি এবং বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফ.সি.পি.এস। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বহু গ্রন্থের প্রণেতা।
মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতি শুরু করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :