ঢাকা: রাজধানীর উপকণ্ঠ পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ) ২০২৫।
মেলার শুরুতে দর্শনার্থীর উপস্থিতি আশানুরূপ না হলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থী।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণ যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে ও কেনাকাটা করতে এসেছেন অনেকেই।
রাজধানী ঢাকা থেকে বাণিজ্যমেলায় যাওয়ার প্রবেশপথ মূলত একটিই, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ৩০০ ফিট সড়ক দিয়ে। আজ শুক্রবার এ সড়কে যান চলাচল বাড়ায় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে প্রগতি সরণি এবং বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় আজ প্রায় প্রতিটি স্টলে মানুষের উপচেপড়ে ভিড়। ব্যস্ত বিক্রেতা ও স্টলের কর্মীরাও। মূল ভবনে থাকা স্টলগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মানুষ গিজগিজ করছে বাইরে উন্মুক্ত স্থানেও।
ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় জনসমুদ্র
ভিড় ঠেলে হল ‘বি’ তে প্রবেশ করতেই শোনা গেলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাক। কেউ দরদাম করছেন, কেউ আবার পছন্দের পণ্য যাচাই-বাছাই করছেন।
রাইট চয়েজ নামের পোশাক স্টলের সেলসম্যান মামুন জানান, আজ ছুটির দিন থাকায় সকাল থেকেই মানুষের আনাগোনা ছিল। বিকেল থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। মেলা শুরুর পর প্রথম শুক্রবার তেমন ভিড় না থাকলেও আজ অনেকেই এসেছেন। বেচাকেনাও ভালো।
মামুন বলেন, আমাদের স্টলে নারীদের সব ধরনের টু-পিস, থ্রি-পিস, দোপাট্টা, কুর্তা, পাঞ্জাবি, শাড়ি, কামিজসহ বিভিন্ন পোশাক পাওয়া যায়। আজ সব পণ্যে ৩০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যছাড় চলছে।
পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন আহমেদ আজিজ। তিনি বলেন, প্রতিবছরই মেলায় আসা হয়। কেনাকাটার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে সময় কাটানো যায়। তবে আজ মেলায় একটু বেশিই ভিড়।
সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। নাবিস্কো প্যাভিলিয়নের সেলসম্যান মনির বলেন, আজ বেচাকেনা বেশ ভালোই চলছে। ছুটির দিন তো আছেই, পাশাপাশি আজ আবহাওয়াটাও ভালো। তাই অনেকে মানুষ এসেছে।
মনির আরও বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের কিছু চকলেট, বিস্কুট, টোস্ট, কেকের প্যাকেজ রয়েছে। বিভিন্ন দামের এসব প্যাকেজে সব ধরনের আইটেম পাওয়া যায়। ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকার প্যাকেজ রয়েছে।
ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় জনসমুদ্র
এসময় আক্তার নামের এক ক্রেতা বলেন, সব দোকানে এই বিস্কুট পাওয়া যায় না। তাই একসঙ্গে প্রায় ২০০০ টাকার বিস্কুট কিনলাম।
দেশি স্টলের পাশাপাশি বিদেশি স্টলগুলোতেও সমান ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জাপানিজ কাপ নুডলস ব্র্যান্ড নিসসিনের স্টলের সেলসম্যান প্রিয়া বলেন, আমাদের স্টলে অরিজিনাল জাপানিজ কাপ নুডলস পাওয়া যায়। নানান ধরনের প্যাকেজ রয়েছে। বিভিন্ন ফ্লেভারের মধ্যে স্পাইসি রামেনটা বেস্ট সেলার।
ইরানি পণ্য সমাহার স্টলে রুটি মেকার, কিচেন চপিং সেট, মেলামাইন, সিরামিক, অ্যালুমিনিয়ামের বাসনকোসনসহ নানান ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
রাফি সুপার ডুপার স্লাইসার স্টলের কর্ণধার রাফি বলেন, মেলা উপলক্ষে ৮ পিসের কিচেন স্লাইসার এক হাজার টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়া ৬ পিসের সেট ৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ কোকাকোলা প্যভিলিয়ন ফুড কোর্ট। এখানে রয়েছে ছয়টি ভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টল। এর মধ্যে রয়েছে সুমি’স হট কেক, ট্রাই-স্টেট এন্ট্রি, কাচ্চি ভাই, পান্ডা ডাম্প্লিংস, সালাদ লাভারস এবং হার্ফি। কোক স্টুডিও বাংলার গানে মুখরিত হয়ে রয়েছে প্যাভিলিয়নটি।
ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় জনসমুদ্র
মেলায় টেস্টি ট্রিটের প্যাভিলিয়ন দুইটি। একটি জুলাই চত্বরের বিপরীতে, অন্যটি মূল ভবনের পেছনে। এখানে কথা হয় প্রিতম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে।
প্রিতম বলেন, এখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যায়। তাই অন্যসব রেস্টুরেন্টে না গিয়ে টেস্টি ট্রিট থেকে খেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
অলটাইম প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, এখানে ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকার মধ্যে নানান ধরনের মিক্সড প্যাকেজ রয়েছে।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :